পদ্মা সেতুর স্প্যানের ছবি দেখে কেঁদেছি: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

পদ্মা সেতুর স্প্যান বসানোর ছবি ও ভিডিও দেখে কেঁদেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখন পদ্মা সেতুতে প্রথম স্প্যান বসল, সত্যি কথা বলতে কী, এসব ছবি ভিডিও দেখে আমরা দুই বোন (শেখ রেহানা) কেঁদেছি।’

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান শেষে দেশে ফেরার পর ৭ অক্টোবর শনিবার সকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

পদ্মা সেতুর অগ্রগতি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরকম খরস্রোতা নদীতে (পদ্মায়) সুপারস্ট্রাকচার করা বিরাট চ্যালেঞ্জ। অনেকেই সন্দিহান ছিল। আল্লাহর রহমতে আমরা করেছি। ওবায়দুল কাদের স্প্যান বসানোর উদ্বোধনে দেরি করতে চেয়েছিল। আমি বলেছি- না। এটা নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। অনেক মানুষকে অপমানিত হতে হয়েছিল। এক সেকেন্ডও দেরি করবো না।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। স্থানীয় সময় রাত তিনটায় ম্যাসেজ এলো। জানলাম স্প্যান বসানো হয়েছে। জেগেই রয়েছি; বললাম ছবি পাঠাও। ওবায়দুল কাদের ছবি ও ভিডিও দুটাও পাঠালেন। সেগুলো দেখে দুই বোন (শেখ রেহানা) সেখানে কেঁদেছি। অনেক অপমানের জবাব আমরা দিতে পারলাম, এটাই সব থেকে বড় অর্জন।’

দৃশ্যমান পদ্মা সেতু। সংগৃহীত ছবি

দৃশ্যমান পদ্মা সেতু। সংগৃহীত ছবি 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমরা করতে পারব এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চায়নি। আমাদের অনেক সিনিয়র ক্যাবিনেট সদস্যও বিশ্বাস করেননি। তাদের কথা ছিল, বিশ্বব্যাংকের সাহায্য ছাড়া এটা করা যাবে না। কিন্তু আমি বলেছিলাম, যত দিন নিজেদের অর্থে করতে না পারব তত দিন করব না। কিন্তু মিথ্যা অপবাদ নিয়ে পদ্মা সেতু করব না। ক্ষমতার লোভে আর নির্বাচনের জেতার লোভে এটা আমি করব না। এটা আমার স্বভাব না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন অর্থায়নের কথা বলেছি, দেশ-বিদেশে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। আস্থা অর্জন করা একজন রাজনীতিকের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় পাওয়া। পদ্মা সেতু বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। এ নিয়ে আমাদের সরকার, আমার পরিবারের উপর অনেক অপবাদ দেওয়া হয়েছে, হেয় করা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। কিন্তু এটি দৃশ্যমান হওয়ায় সেসব অপমানের জবাব দেওয়া হয়েছে।’

আমরা বিশ্ব্যবাংকের অর্থায়ন না করার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। বিশ্বব্যাংকের একজন এখানে এসে আমার নামে অপবাদ দিয়েছে। পরে দুর্নীতির কথা বলে এই পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমাকে, রেহানাকে, আমার ছেলে-মেয়েকে দুর্নীতির তদন্তের নামে আন্তর্জাতিক সংস্থা দিয়ে এমন মানসিক যন্ত্রণা দিয়েছে যেটা আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। সেটা আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের জন্য ছিল দুঃসময়। কিন্তু আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি। এখন শুনছি, সেই তদন্তকারীর নামেই দুর্নীতির নানা তথ্য বেরিয়ে আসছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।  

উল্লেখ্য, ৩০ সেপ্টেম্বর নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুতে পিলারের ওপর বসানো হয়েছে প্রথম স্প্যান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ছিলেন।

শেয়ার করুন