বান্দরবানে জুমের নতুন ফল-ফসলে ত্রিপুরাদের নবান্ন উৎসব ‘মাইক্তা চাম পান্দা’

বান্দরবানের হাতিভাঙ্গা ত্রিপুরা পাড়ায় আয়োজিত নবান্ন উৎসবে ঐতিহ্যবাহী নাচ-গানে মেতে ওঠেন তরুণ-তরুণীরা।

জুমের নতুন চালে বানানো পিঠা, বিন্নি চালের ভাত আর ফলমূল ভোজের মধ্য দিয়ে ‘মাইক্তা চাম পান্দা’ (নবান্ন উৎসব) পালন করেছেন বান্দরবানের হাতিভাঙ্গা ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা। ২৪ নভেম্বর শুক্রবার সকালে পাড়ায় আসা অতিথিদের সম্মানে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ফসল, বাদ্যযন্ত্র ও কৃষি সরঞ্জাম প্রদর্শণীরও আয়োজন করা হয়।

হাতিভাঙ্গা পাড়াপ্রধান বাদুহা ত্রিপুরার সভাপতিত্বে এসব অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য সিংইয়ং ম্রো, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ফজলুর রহমান, কেএসআই-এর পরিচালক মং নু চিং, বান্দরবান প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, কেএসআই এর নির্বাহী সদস্য গাব্রিয়েল ত্রিপুরাসহ সংশ্লিষ্টরা।

নবান্ন উৎসবে আসা অতিথিদেরকে জুমের ফলমূল ও ফসলের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন গ্রামের একজন বাসিন্দা।

অনুষ্ঠানে অতিথিদেরকে জুমের বিভিন্ন ফল, ফসল এবং সেসব দিয়ে তৈরি করা পিঠাপুলির সাথে পরিচয় করিয়ে দেন গ্রামের বাসিন্দারা। এছাড়া জুম চাষ ও পাহাড়ের নবান্ন উৎসবের প্রেক্ষাপট অবহিত করেন কেএসআই-এর পরিচালক মং নু চিং। তিনি জানান, কালক্রমে জুমের জমি এবং ফলন কমে যাওয়ায় চাষীরা হর্টিকালচারসহ ভিন্ন চাষপদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। তারপরও সংস্কৃতি ও জীবনাচারের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়।

উৎসবে প্রদর্শিত জুমের ফলমূল ও ফসল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, এখানকার বাসিন্দাদের বৈচিত্রময় জীবনাচার মুগ্ধ হয়ে দেখার মত। কেএসআই-এর এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী গড়াইয়া নাচ, বোতল নাচ, বাঁশি বাজানোর সাথে আধুনিক নাচ-গানও পরিবেশিত হয়। পরে জুমের ফল-ফসলে রান্না করা ভোজে অংশ নেন অতিথিসহ গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা।

ঐতিহ্যবাহী পোশাক-আশাক ও অলঙ্কারে সেজে ‘মাইক্তা চাম পান্দা’ উৎসবে আসেন ত্রিপুরা নারীরা।
শেয়ার করুন