নতুন কমিটি হচ্ছে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের: অভিযুক্তরা স্থান পাবেন না

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার নেতৃত্বে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা। ক্যাসিনো কেলেঙ্কারি, চাঁদা ও টেন্ডারবাজি, অনুপ্রবেশকারী, ক্ষমতার অপব্যবহার, পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে অর্থের বিনিময়ে কমিটিতে স্থান দেয়াসহ নানা অপকর্মে অভিযুক্ত নেতারা নতুন কমিটিতে স্থান পাবে না।

৩০ নভেম্বর শনিবার এই দুই মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে নতুন নেতৃত্ব চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে তা ঘোষণা করা হবে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। এবারও মহানগরের অধিকাংশ পদে পরিবর্তন আসতে পারে। উত্তর-দক্ষিণ দুটোতেই। শনিবার কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে।’

জানা গেছে, ওই দিন বেলা ১১টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বিকালে রমনার বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিলের দ্বিতীয় অধিবেশনে দুই মহানগরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন ওবায়দুল কাদের।

ক্যাসিনো-কাণ্ডে রাজধানীর গেণ্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়ার নামের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ কয়েক নেতার নাম আলোচনায় আসে। এরপর থেকেই কাউন্সিল সামনে রেখে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের নেতৃত্বে আনতে কাজ করছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।

নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী নেতাদের একটি তালিকা তৈরি করে রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন নেতৃত্বে কারা আসবেন তারও একটি খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেছেন তিনি। কাউন্সিলের মাধ্যমে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির একটি চ্যালেঞ্জিং কমিটি উপহার দেবেন প্রধানমন্ত্রী।

নীতিনির্ধারক সূত্রে আরো জানা গেছে, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে শেষ মুহূর্তে আলোচনায় আছেন অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য। এছাড়া বর্তমান সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ, সহসভাপতি শেখ বজলুর রহমানের নামও শোনা যাচ্ছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির নাম আলোচনার শীর্ষে। এছাড়া বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা এমএ কাদের খান, সদস্য বিএম সিরাজুল ইসলামের নাম আলোচনায় আছে।

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে বর্তমান কমিটির সহসভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, অভিন্ন ঢাকা মহানগর কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, নুরুল আমিন রুহুলের নাম শোনা যাচ্ছে। বর্তমান সভাপতি আবুল হাসনাতও থাকতে পারেন।

সাধারণ সম্পাদক পদে অভিন্ন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের ছেলে এবং ২৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর বিন আবদুল আজিজ (তামিম) আলোচনায় আছেন। এছাড়া বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি আওলাদ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীলিপ কুমার রায়, সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদ কামাল এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আখতার হোসেনের নামও শোনা যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র জানায়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে সাঈদ খোকনও সাধারণ সম্পাদক পদে এগিয়ে থাকবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা, ১০০টি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোর সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

শেয়ার করুন