আন্তরিকতাই নায়লার গোপন রেসিপি

কুইন বী’স ফুড কালেকশনের স্বত্ত্বাধিকারী নায়লা খান।

মা মাত্রই সন্তানের সুস্বাস্থ্য কামনা করেন। আমাদের আজকের গল্পের যিনি প্রধান তিনিও একজন মা, যিনি তার সন্তানকে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার দেবার ইচ্ছা থেকে শুরু করেন এক নতুন যাত্রা। যার রেশ ধরেই জন্ম নেয় কুইন বী’স ফুড কালেকশন।

নায়লা খানের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ঢাকায়। পেশায় আইনজীবী। বিয়ের পর নায়লার প্রথম কন্যার জন্মের পরে মেয়েকে বাইরের খাবার না খাওয়ানোর ইচ্ছা থেকে নিজেই হরেক রকম রান্না করা শুরু করলেন। কিনে ফেললেন একটা ওভেনও। নানা রকম কেক, পিৎজা, রুটি, পেটিস, পাসতা, চাইনিজ খাবার, মোগলাই বানাতেন নিয়মিত। বাসার যেকোনো অনুষ্ঠানেও নিজেই রান্না করার চেষ্টা করতেন।

“যখন কাউকে খাওয়ানোর বিষয় আসে আমি সবসময়ই চেষ্টা করি নিজে রেঁধে খাওয়াতে। খেয়ে কারো তৃপ্তিমাখা চেহারা দেখলে আমার অনেক আনন্দ হয়। আর সেজন্যই এই তৃপ্তি আরেকটু ছড়িয়ে দিতে আমি আমার রান্না নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই। কোন কাজ শুরু করতে সেই কাজে পেশাদারিত্ব রপ্ত করার ক্ষেত্রে আমি বিশ্বাসী। আর তাই বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত একটা বেকিং কোর্সে ভর্তি হই নিজের ভালোলাগার কাজগুলোকে আরেকটু ঝালিয়ে নিতে।”- বলছিলেন নায়লা খান।

শুধু নিত্যনতুন খাবার রান্নাই নয়, খাবারের ভেতরের উপাদান নিয়ে জানারও আগ্রহ নায়লার। “উপাদান নির্বাচন খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোন উপাদানের কি খেলা তা অনেকটা জাদুর মত। খাবারের উপাদানের রসায়ন ঠিকঠাক হলে খাবারের মান বেড়ে যায় দ্বিগুণ আকারে।”- বলেন কুইন বী’স ফুড কালেকশনের স্বত্বাধিকারী নায়লা।

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওই সার্টিফিকেট কোর্সের জন্য একটা ফেইসবুক পেইজ থাকা বাধ্যতামূলক ছিলো। আর তাই একদিন খুলে ফেললাম আমার কুইন বী’স ফুড কালেকশন। আমার মেয়ে লোগো ডিজাইন করে দিল। আকস্মিকভাবে হলেও সেদিন থেকেই আমি আমার নতুন পথ চলা শুরু করে দিলাম।”- বলেন নায়লা।

নিজের চেম্বারের কাজ, সংসার সামলে পুরোদমেই চলছে নায়লার উদ্যোগের কাজ। স্বপ্ন দেখেন নিজের প্রতিষ্ঠানের আউটলেট থাকবে পুরো রাজধানী জুড়ে। সে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ধাপে ধাপে এগিয়ে চলেছেন কর্মঠ এই মানুষটি। ‘‘এখন পর্যন্ত যারাই একবার আমার বানানো খাবার খেয়েছেন, তারাই নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত হয়েছেন। এটি আমার জন্য খুবই ইতিবাচক একটা ব্যাপার। তবু মূলধন সংকট, কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, কাঁচামালের উচ্চ মূল্য- এইরকম কিছু চ্যালেঞ্জও আছে।”- জানান নায়লা।  কিন্তু সব চ্যালেঞ্জ ছাপিয়ে নায়লা মনে করেন তার উদ্যোগ এগিয়ে যাবে, কেননা তিনি নিখাদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশনে বদ্ধপরিকর। 

“আমার উদ্যোগের নাম কুইন বী’স কেন জানেন? কারণ প্রকৃতিতে মধু একটি বিশুদ্ধ খাবার। আর এই খাবার উৎপাদনে রানী মৌমাছির নেতৃত্বের ভূমিকা অপরিসীম। তাই রানী মৌমাছিকে আমার উদ্যোগের প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছি। কেননা বিশুদ্ধ খাবার সরবরাহের ক্ষেত্রে আমার উদ্যোগ কখনো আপোষ করেনা, করবেওনা।”- আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ নায়লার কণ্ঠে।

“খাবারে সব উপাদান দিলাম, সাথে দিলাম একটু আন্তরিকতা আর ভালবাসা, ব্যস কেল্লাফতে! মজার খাবারের এটাইতো রেসিপি!”

ফেইসবুক পেইজের লিংক: কুইন বী’স ফুড কালেকশন

শেয়ার করুন