হঠাৎ করেই এলাচের মূল্য বাড়লো কেজিপ্রতি ৬শ’ টাকা

পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির বিপর্যয় না কাটতেই হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে মসলা জাতীয় পণ্য এলাচের। পাইকারি বাজারে এলাচের দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা বাড়লেও খুচরা বাজারে এটি বাড়ানো হয়েছে ৬০০ টাকা। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি এলাচের মূল্য ছিল ২৪০০ টাকা। আর এখন বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত এলাচের মূল্য এমনিতেই চড়া থাকে। আর ক্রেতাদের অভিযোগ, এ সময়ে বিয়ে, মেজবান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের খাবারের অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন।

এদিকে, ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন মূলত এলাচের মূল্য বেড়েছে ভারতে এই পণ্যটির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণে। মসলার পাইকাররা জানান, ভারতের কেরালায় গত বছরের বন্যা ও এ বছরের খরায় এলাচের উৎপাদন ব্যাপক কমেছে। এছাড়া দেশটিতে সম্প্রতি ঝড়ে এলাচসহ প্রচুর ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে এলাচের বড় রফতানিকারক দেশ গুয়েতেমালার ওপর চাপ পড়েছে। যার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে এই পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পাইকারি গরম মসলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে এলাচের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশেও দাম বেড়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে এলাচের সংকট দেখা দিয়েছে। ভারতেও এলাচের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের দেশে পাইকারি বাজারে এলাচের মূল্য কেজিতে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।’

এদিকে সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্য অনুযায়ী, গত ২৭ নভেম্বর প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকায়। আর মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে অর্থাৎ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ৩০০০ টাকায়।

টিসিবির তথ্য বলছে, দুই দিনের ব্যবধানে এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আর গত বছরের ২৯ নভেম্বর প্রতি কেজি এলাচের মূল্য ছিল ১৫৫০ থেকে ২০০০ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ৮৩ দশমিক ১০ শতাংশ।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘এলাচের মূল্য এভাবে যারা বাড়িয়েছেন, তারা মূলত অতি মুনাফালোভী।’ তার মতে, ‘বাজারে কোনও প্রতিযোগিতা না থাকায় ব্যবসায়ীরা যে যার মতো যেকোনও পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে ভোক্তাদের সমস্যা হলেও তারা (ব্যবসায়ীরা) ঠিকই পার পেয়ে যাচ্ছেন।’

শেয়ার করুন