কংগ্রেসে ইরানের পরমাণু চুক্তির বিরুদ্ধে যাচ্ছেন ট্রাম্প

ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে করা পরমাণু চুক্তি ইরান মেনে চলছে না—মার্কিন কংগ্রেসের সামনে এমন বক্তব্যই দিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস ও ওয়াশিংটন পোস্ট। এতে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের আরো অবনতি হতে পারে, ইরানের ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনাও ঘটতে পারে।

পরমাণু চুক্তি ইরান মানছে কি না—এ ব্যাপারে কংগ্রেসে নিয়মিত প্রতিবেদন দেয় মার্কিন কর্তৃপক্ষ। আগের প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ইরান চুক্তি মেনে চলছে। এবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উল্টোটা বলতে যাচ্ছেন বলে জানায় যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সংবাদমাধ্যম। আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কংগ্রেসে এ ব্যাপারে ট্রাম্পের বক্তব্য উত্থাপনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

বরাবরই ইরানের পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা করে আসা ট্রাম্প গত বৃহস্পতিবার সামরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে একই অবস্থান জানান দিয়ে বলেন, ‘ইরান পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হবে, সেটা আমরা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না। ’ তাঁর অভিমত, ‘ইরানের প্রশাসন সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দিচ্ছে এবং মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সহিংসতা, রক্তপাত আর বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দিচ্ছে। এ জন্য আমাদের অবশ্যই ইরানের অব্যাহত আগ্রাসন ও পরমাণু উচ্চাভিলাষের সমাপ্তি ঘটাতে হবে। ’ বৈঠকেই ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘ইরানের ব্যাপারটা শিগগির আপনারা জানতে পারবেন। ’ এদিকে গতকাল রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ইরানের ব্যাপারে ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ সিদ্ধান্ত নিতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানান।
কাজাখস্তান সফরকালে এ রুশ মন্ত্রী বলেন, ‘এর (ইরানের পরমাণু চুক্তির) বর্তমান অবস্থাটা রক্ষা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণটাও অবশ্যই অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। ’ ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে—এমন অভিযোগে পশ্চিমা বিশ্ব দীর্ঘ সময় ধরে ইরানের ওপর নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞা জিইয়ে রেখেছিল, যা ইরানের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। পরিস্থিতি বদলাতে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে চুক্তি করে ইরান। পরমাণু কার্যক্রম স্থগিত রাখার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে মর্মে চুক্তি হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ চুক্তির বিরুদ্ধে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্ররা পরমাণু চুক্তি টিকিয়ে রাখার পক্ষে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইউরোপীয় কূটনীতিক বলেন, ‘আমরা ইউরোপীয়রা এ চুক্তি করেছি। এ চুক্তি কাজ করছে। ইউরোপীয় হিসেবে এ চুক্তির অন্যথা করা অসম্ভব। ’ ইরানের এক কূটনীতিকও জানিয়েছেন, ট্রাম্প যা-ই বলুন, অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী রয়েছে, যারা ইরানে বিনিয়োগ করতে মোটেই ভয় পাচ্ছে না। সূত্র : এএফপি।

শেয়ার করুন