ত্রিপুরায় সহিংসতা, লেনিনের মূর্তি ভাঙচুর

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা শুরু হয়েছে। দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়ার কলেজ স্কয়ারে থাকা লেনিনের মূর্তিটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। ত্রিপুরায় টানা ২৫ বছর শাসনে থাকা বাম দুর্গের পতনের পর রুশ বিপ্লবের জনক বাম রাজনীতির বৈশ্বিক নেতা লেনিনের মূর্তি ভেঙে ফেলেছে একদল যুবক। অভিযোগ উঠেছে, এসব যুবক বিজেপি-সমর্থক।

আজ মঙ্গলবার টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের খবরে জানানো হয়, অবৈধভাবে পাবলিক স্কয়ারে বুলডোজার ব্যবহার করা হয়েছে। গেরুয়া গেঞ্জি পরা যুবকদের বুলডোজার দিয়ে লেনিনের মূর্তি ভাঙার একটি ভিডিও স্থানীয় একটি বার্তা সংস্থা প্রচার করেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই যুবকেরা ‘ভারত মাতাকি জয়’ (ভারত মায়ের জয় হোক) স্লোগান দিচ্ছে। লোকজন ভিড় করে সে দৃশ্য দেখছে।

লেনিনের মূর্তি ভাঙার এই দৃশ্য দূর ও নিকট অতীতের বড় দুটো ঘটনাই মনে করিয়ে দেয়। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর সেখানে লেনিনের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছিল। ইরাকের বাগদাদে সরকারের পতনের পর সাদ্দাম হোসেনের মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছিল।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ত্রিপুরা বিধানসভার নির্বাচন হয়। বিধানসভার ৬০টি আসনের মধ্যে ৫৯ টিতে নির্বাচন হয়। গত শনিবার ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, সেখানে কখনোই কোনো আসন না পাওয়া বিজেপি-আইপিএফটি (ইনডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা) জোট অপ্রত্যাশিতভাবে হটিয়ে দিয়েছে সিপিএমকে। বিজেপি জোট পেয়েছে ৪৩ আসন। আর সিপিএম পেয়েছে মাত্র ১৬টি আসন।

তবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই সিপিএম রাজ্যজুড়ে বিজেপির সহিংস কর্মকাণ্ডের অভিযোগ করছে। সিপিএমের অভিযোগ, বিজেপি জোট-সমর্থকেরা বিভিন্ন জেলায় তাদের দলীয় কার্যালয় ও নেতাদের বাড়ি বাড়ি ভাঙচুর করছে এবং আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। সিপিএমের অফিস সেক্রেটারি হরিপদ দাস জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় দলীয় কার্যালয় ও দলের নেতাদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় ২৪০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

অন্যদিকে, বিজেপির পাল্টা অভিযোগ, সিপিএম-সমর্থকেরা তাদের ওপর হামলা করছে। বিজেপি নেতা সুবল ভৌমিক জানান, দল ঘটনাগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। রাজ্যে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি অভিযোগ করেন, সিপিএম-সমর্থকদের হামলায় ১৭ জন বিজেপি-সমর্থক আহত হয়ে এখন হাসপাতালে।

শেয়ার করুন