‘পরিবেশন ও স্বাদে আকর্ষণীয় খাবার আমাকে সব সময়ই টানে। ছোটবেলা থেকেই এই বোধটা কিভাবে যেন আমার ভেতরে জেঁকে বসেছিল। পরবর্তীতে ’৯০ এর দশকে এসে ‘পর্যটন’ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় রান্নার বিভিন্ন কোর্স করি। রান্নার কোর্স করলেও আমি হুবহু রেসিপি কখনও কপি করিনি। নিজের মত করেই সবসময় রান্না করার চেষ্টা করেছি। আমার রান্নায় আমার একটা সিগনেচার রাখার চেষ্টা করি সবসময়।’ বলছিলেন রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচ-এর কে’এস ক্যাটারিংয়ের উদ্যোক্তা কামরুন নাহার।
‘২০০২ সালে প্রথম শুরু করি আমার ক্যাটারিং, রাজধানীর বিভিন্ন স্বনামধন্য স্কুলের শিক্ষকদের নাস্তা এবং লাঞ্চের অর্ডারের কাজ করতাম। তবে পারিবারিক কিছু কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ব্যবসাটা তখন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই। কিন্তু রান্নার প্রতি আমার আগ্রহটা থেকেই যায়। থাইল্যান্ড, ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ যতবার দেশের বাইরে গেছি, সেটা যদি ১০ দিনের ছোট ট্যুরও হয়ে থাকে, তবু চেষ্টা করেছি ৩-৪ দিনের ছোট একটা রান্নার কোর্স করার। সেসব দেশের ট্রেডিশনাল খাবারের উপর আইডিয়া নেওয়ার চেষ্টা করেছি।
প্রায় ১৮ বছর পর, অতীতের সব অভিজ্ঞতা নিয়ে, এবং ত্রুটিগুলোর কথা মাথায় রেখে এই বছরের জানুয়ারি হতে আবার অনলাইনে আমার কে’স ক্যাটারিং শুরু করি। আমি আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে থাকি। ক্লায়েন্টদের যথাসময়ে রিপ্লাই দিয়ে কো-অপারেটিভ থাকার চেষ্টা করি। খাবারের গুনগত মান, স্বাদ ও পরিমাণে আমি কখনো কম্প্রোমাইজ করিনা। তাই কাঁচামালও কোনো খোলা বাজার থেকে আনিনা। এতে খরচটা বেশি হলেও আমরা খাবারের গুনগত মান নিশ্চিত করে যথেষ্ট সাশ্রয়ী দাম রাখার চেষ্টা করি।
ছোট অর্ডার থেকে শুরু করে বেশ কিছু বিয়ের অনুষ্ঠানেও আমরা সুন্দরভাবে খাবার সরবরাহ করেছি। আমরা বর্তমানে ঢাকার সব এলাকায় খাবার ডেলিভারি দিচ্ছি সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে। বাজার থেকে শুরু করে প্যাকিং ও ডেলিভারি প্রতিটি ধাপে আমরা নিশ্চিত করছি ১০০% স্বাস্থ্যবিধি। হোমমেড ট্রেডিশনাল খাবার থেকে শুরু করে অথেন্টিক থাই ও চাইনিজ ফুডের চাহিদা আমাদের ক্লায়েন্টদের সব চেয়ে বেশি।’
ঈদে সার্ভিস চালু থাকে কিনা জানতে চাইলে কামরুন নাহার জানান, ‘ঈদ উপলক্ষে আমাদের ঈদ স্পেশাল সার্ভিস থাকে। এখানে আমরা অফার করি শিক কাবাব, মুঠো কাবাব, সাসলিক, বিফ গ্রিল, বিফ বটি, বিফ তান্দুরি, বিফ রেজালা, হান্টার বিফ, কে’স স্পেশাল স্পাইসি বিফ স্লাইস, বিফ সালাদ। অনেকেই ঈদের সকালের জন্য বিশেষ নাস্তার অর্ডার দিয়ে থাকেন। নাস্তার আইটেমে আছে চালের রুটি, ফ্রেশ পরোটা, বাটার নান, গার্লিক নান, বাটার চিকেন, চিকেন ঝাল ফ্রাই, সব্জি মালাই, সাম্ভার (ডাল) বুটের হালুয়া, শাহী জর্দা, গুলাপ জামুন মিষ্টি, কাপ কাষ্টার্ড, ফ্রুট ইয়োগার্ট, চকলেট পিস (স্লাইস কেক)।
কে’স ক্যটারিংয়ের যাবতীয় কাজ এগিয়ে নিতে দু’জন মানুষ সার্বক্ষণিক আমাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দিন শেষে মুনাফার চেয়েও ক্রেতাদের সন্তুষ্টিই আমাদের বড় পাওয়া, জানালেন কামরুন নাহার।
ফেইসবুক পেইজের লিংক: কে’স ক্যাটারিং