পার্বত্য জনপদের বাতিঘর বীর বাহাদুরকে নিয়ে গর্বিত দুই শিক্ষাগুরু

একান্ত আলাপচারিতায় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং-এর দুই শিক্ষক দীপ্তি কুমার বড়ুয়া এবং মোঃ বাদশা মিঞা।

ছাত্র মন্ত্রী হয়েছে। কালক্রমে হয়ে উঠেছে জননন্দিত জননেতা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম আস্থাভাজন প্রতিনিধি। এ নিয়ে গর্বের শেষ নেই তাঁর দুই শিক্ষাগুরুর। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অন্যজন উচ্চ বিদ্যালয়ের।

হ্যাঁ, বলছি প্রাইমারি স্কুল শিক্ষক বাদশা মিঞা মাস্টার এবং হাইস্কুলের শিক্ষক দীপ্তি কুমার বড়ুয়া (পালি স্যার) এর কথা। শিক্ষাজীবনের দীর্ঘ সময় বীর বাহাদুর যাদের কাছ থেকে নীতি-নৈতিকতা, অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও দেশপ্রেমের শিক্ষা অর্জন করার সুযোগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম এই দুই শিক্ষক।

এই অবদানের কথা প্রতিটি মুহূর্তে স্মরণ করেন স্বয়ং পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি.। সুযোগ পেলেই তুলে ধরেন তাঁর স্কুল জীবনের কথা, স্মরণ করেন তাঁর আজকের এই অর্জনের পেছনে যাদের শ্রম ও যাদের অবদান রয়েছেন তাদের কথা।

গত ১৩ ডিসেম্বর সকালে এক বিশেষ মুহূর্তে বান্দরবানের দুই শিক্ষাগুরু ও পুরনো বন্ধু পালি স্যার আর বাদশা স্যারের সাথে আলাপচারিতায় তাঁরা বলেন, জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও পার্বত্যাঞ্চলের গর্ব বীর বাহাদুরকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূর্ত প্রতীক। পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে অবিরাম ছুটছেন পাহাড় থেকে পাহাড়ে।

তাঁরা আরও বলেন, বীর বাহাদুরের অবদানে বান্দরবানের রুপ পাল্টে গেছে। সর্বশেষ বান্দরবানের মতো অনগ্রসর এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। দীপ্তি কুমার বড়ুয়া (পালি স্যার) যখন ১৯৬৬ সালে বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন তখন ৯ম শ্রেণিতে মাত্র ৬ জন ছাত্র ছিল। তাদের মধ্যে দীপঙ্কর তালুকদার এম.পি, সাচিংপ্রু জেরী, সুধাংশু বিমল চক্রবর্তী অন্যতম। দীপংকর তালুকদার ছিলেন অন্যদের তুলনায় মেধাবী ও ক্লাসের ফার্ষ্টবয়।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বান্দরবান কলেজের উন্নয়নের জন্য ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেন। সেই কলেজ এখন সরকারিকরণ হয়ে মাস্টার্স কোর্স পর্যন্ত চালু হয়েছে। যেখানে বর্তমানে প্রায় ১০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এসব অবদানের পেছনে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুরের নাম। তাঁর জন্ম হয়েছে বলে এক সময়ের পিছিয়ে পড়া অঞ্চল বান্দরবান এখন উন্নতির শিখরে পৌঁছেছে। বান্দরবানের রুমা ব্রিজ, থানছি ব্রিজ ও ভরাখালী ব্রিজের সুফল ভোগ করছে বান্দরবানবাসী, যে কথা কোনোদিন ভুলবে না বান্দরবানের মানুষ। মানুষ স্মরণ রাখবে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি কলেজসহ বান্দরবানের ৭টি উপজেলার কলেজ ও অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কথা। যেসব অঞ্চলে এক সময় জনমানুষের যাতায়াত ও বসবাসের কথাও কেউ কল্পনা করেনি। দূর্গম এলাকাগুলোতে শিক্ষার আলো ছড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে গেছে মানুষের দোরগোড়ায়।

দুই শিক্ষাগুরু আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল এখন বাংলাদেশের মানুষ ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার প্রিয় শিক্ষক আবদুস সাত্তার মাস্টারের কথা সব সময় স্মরণ করেন। ঠিক তেমনি শেখ হাসিনার প্রিয়ভাজন ও যার উপর বারবার আস্থা রেখেছেন সেই নেতা বীর বাহাদুরও তার শিক্ষকদের অবদানের কথা ভুলে যাননি এক মুহূর্তের জন্যও। তাঁদের সুখ-দুঃখের খোঁজ নেন নিয়মিত।

পরিশেষে শিক্ষক দীপ্তি কুমার বড়ুয়া (পালি স্যার) বলেন, আমি না চাইতেই বীর বাহাদুর আমাকে বান্দরবান জেলা আওয়ামীলীগের মতো মর্যাদাশীল সংগঠনের সহ-সভাপতির দায়িত্বাসনে বসিয়েছেন। তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। বীর বাহাদুর দীর্ঘজীবি হউক। আজীবন গণমানুষের সমর্থন লাভ করুক। এই কথাগুলোর অকুন্ঠ সমর্থন জানালেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বাদশা মিঞা মাষ্টার।

শ্রদ্ধেয় শিক্ষক দীপ্তি কুমার বড়ুয়া (পালি স্যার) এর বর্তমান বয়স ৮৫ হলেও তিনি এখনও চিরসবুজ। এখন নানান সামাজিক ও ধর্মীয় কাজের সাথে সম্পৃক্ত থেকে জীবনের অবসর সময় পার করছেন তিনি। অপরদিকে ৭১ বছর বয়সী শ্রদ্ধেয় শিক্ষক বাদশা মিঞা স্যার বরাবরের মতোই সদালাপী ও পরোপকারী মানুষ। দীর্ঘজীবি হোন শ্রদ্ধেয় পালি স্যার ও বাদশা স্যার।

লেখক: রাজেশ দাশ, সমাজকর্মী, বান্দরবান।

শেয়ার করুন