৪০ বছরের পুরনো সেই লক্কর-ঝক্কর বাসটিই জুটলো বান্দরবানের কলেজ শিক্ষার্থীদের!

চলাচল অযোগ্য বাসকে সচল করে আবারো শিক্ষার্থী পরিবহণ শুরু করলো বান্দরবান সরকারী কলেজের বাসটি। ছবি- খোলাচোখ ডট কম।

রফিকুল আলম মামুন, বান্দরবান।। শেষমেষ আবারো সেই ৪০ বছরের পুরনো লক্কর-ঝক্কর মার্কা বাসটিই কপালে জুটলো বান্দরবান সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের। কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে দীর্ঘদিন গ্যারেজে বিকল পড়ে থাকা বাসটি কোনোমতে সচল করে আবারো শিক্ষার্থী পরিবহণ শুরু করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, দফায় দফায় মেরামতের পরও সর্বশেষ ১২ বছর ধরে বিকল ছিল কলেজের বাসটি। কিন্তু মেরামতের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় সচল করা যাচ্ছিলনা শিক্ষার্থী পরিবহনের একমাত্র বাসটি। ফলে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের নানা ভোগান্তি পোহাতে হতো কলেজে পৌঁছাতে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে বাসটি বিকল হয়ে পড়ে ছিল। বিআরটিসি’র একটি বাস দেওয়ার পরও ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানানোর পরও বাসটি পুরোপুরি চালু করতে পারছিলোনা কলেজ কর্তৃপক্ষ।

শেষ পর্যন্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা বেশ কয়েকবার দ্বারস্থ হন পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রতিমন্ত্রী নিজ উদ্যোগে বাসটি মেরামত করার সিদ্ধান্ত নেন। বাসটি মেরামত হয়ে সচল হলে আজ থেকে শিক্ষার্থী পরিবহণ পুরোপুরি শুরু করে।

এদিকে সকাল থেকে বেশ কয়েক দফায় শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থী পরিবহণ করতে দেখা গেছে খুঁড়িয়ে চলা বাসটিকে।

কলেজের মাষ্টার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী নাজমুল হোসনে বাবলু জানান, দীর্ঘ দেন-দরবারের পর পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বাসটি চালু হওয়ায় ছাত্রছাত্রীরা খুশি। আপাততঃ কলেজে আসাযাওয়া করতে দূর-দূরান্তের শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

অনার্সের শিক্ষার্থী টিপু দাশ জানান, পুরনো হলেও বাসটি সচল হওয়াতে দুর্ভোগ থেকে আপাততঃ রেহাই পাওয়া যাবে। আশা করবো বাসটি সচল থাকবে এবং নতুন বাসও যোগ হবে।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মকছুদুল আমিন জানান, ছাত্র-ছাত্রীদের দাবি বিবেচনায় নিয়ে বাসটি মেরামত করে চালু করা হয়েছে। তবে বেশিদিন চালু থাকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। কলেজে বাসটি মেরামত করার জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকা সত্ত্বেও প্রতিমন্ত্রীর সহযোগিতার আশ্বাসে কলেজের খরচে বাসটি দ্রুত মেরামত করা হয়, জানান অধ্যক্ষ।

তবে পুরনো বাসটি চলাচলের অযোগ্য বলে আরো একটি ভাড়া বাস কলেজে যাত্রী পরিবহণে ব্যবহার করার ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এদিকে বিআরটিসি থেকে দেওয়া বাসের ব্যাপারে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জানান, বিআরটিসি’র বাসটি ফিরে পেতে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

এর আগে ২০১২ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বান্দরবান সফরে এলে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিআরটিসি’র বাস উপহারের প্রতিশ্রুতি দেন। সে অনুযায়ী ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ তিনটি বাস সরবরাহ করে বান্দরবানের শিক্ষার্থীদের জন্য।

এর একটি বাস বরাদ্দ ছিলো বান্দরবান সরকারি কলেজের জন্যে । কিন্তু বছর না যেতে সেই বাসটি বিকল হয়ে যায় এবং পরে তা বিআরটিসিকে ফেরত দেওয়া হয়।

 

 

 

 

শেয়ার করুন