১৮ বছর পর পাহাড়ে পূর্ণ মন্ত্রী: বিশিষ্টজনদের প্রত্যাশা কী?

মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণের পর বীর বাহাদুরকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন রাঙামাটির সাংসদ দীপংকর তালুকদার এবং খাগড়াছড়ির সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। - ছবি: সংগৃহীত

বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, বান্দরবান ॥ ১৮ বছর পর পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ করা হয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। বান্দরবান থেকে ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচিত সাংসদ বীর বাহাদুর উশৈসিংকে পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়াকে বিভিন্ন কারণে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পাহাড়ের মানুষ। পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নসহ স্থানীয় নানা সমস্যার সমাধানে তাঁর এই পূর্ণ মন্ত্রীত্বের ক্ষমতা বেশ বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন তাঁরা।

এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষ জেলা পরিষদসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে তাঁদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বীর বাহাদুরকে স্বাগত জানিয়েছেন সবাই।

তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকজন বলেছেন, ১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৯৮ সালে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে খাগড়াছড়ির সাংসদ কল্পরঞ্জন চাকমাকে মন্ত্রী করা হয়েছিলো। এরপর থেকে সবাই ছিলেন উপমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী। উপমন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কাজ করার ও সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকে, যা মন্ত্রীর থাকেনা। বীর বাহাদুরকে পূর্ণ মন্ত্রী করায় পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন, ভূমি কমিশন কার্যকর, জেলা পরিষদে পুলিশ বিভাগ হস্তান্তর এবং এ অঞ্চলের সব জনগোষ্ঠীর সুষম উন্নয়নের পথ সুগম হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি ও রাঙামাটি জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গৌতম দেওয়ান বলেন, পার্বত্য যে জেলা থেকেই মন্ত্রী হোক, তাঁকে স্বাগত জানাই। পার্বত্যবাসীর দরকার পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়নের মাধ্যমে অধিকার সংরক্ষণ এবং এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীভিত্তিক সুষম উন্নয়ন। মন্ত্রী বীর বাহাদুরের কাছে পার্বত্যবাসীর এটাই আশা।

খাগড়াছড়ি মং সার্কেলের চীফ বা মং রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী বলেন, ১৮ বছর পর পার্বত্যবাসী একজন পূর্ণ মন্ত্রী পেয়েছে। বীর বাহাদুরকে মন্ত্রী করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী চুক্তি বাস্তবায়ন, ভূমি সমস্যা সমাধানের উদ্যোগসহ পার্বত্য অঞ্চলের সবকিছুর ক্ষমতায়ন করেছেন।

তবে চাকমা সার্কেলের চীফ বা চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের মতে, নতুন মন্ত্রিপরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া নিয়ে এখনো মন্তব্য করার সময় হয়নি।

এদিকে বীর বাহাদুরকে প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণ মন্ত্রী করায় বান্দরবানের পাহাড়ি-বাঙালি সব জনগোষ্ঠীর মানুষ উচ্ছ্বসিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে জেলা শহরের অনেক জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে। আড়াই হাজার জনসংখ্যার খুমি সম্প্রদায়ের একমাত্র উচ্চশিক্ষিত সদস্য লেলুং খুমি বলেন, বীর বাহাদুর মন্ত্রী হওয়ায় তাঁরা খুশি। সংখ্যায় অতি কম জনগোষ্ঠীগুলোর সুষম উন্নয়ন জরুরি। বীর বাহাদুর সেটি করবেন বলে তিনি আশাবাদী।

শেয়ার করুন