বান্দরবান শহরে পানির হাহাকার, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের বক্তব্যে ধোঁয়াশা, শহরবাসী ক্ষুব্ধ

বান্দরবান পৌর এলাকায় পানি সরবরাহে অচলাবস্থায় নাকাল হয়ে পড়েছেন শহরবাসী। পানি সরবরাহ কবে চালু হবে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। তীব্র গরমের এই মৌসুমে পানি সরবরাহ না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন পৌর এলাকার বাসিন্দারা।

শহরের বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, গত ৫/৬ দিন ধরে পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বাসাবাড়ির ট্যাংকে সঞ্চিত পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় কেউ ছুটছেন পুকুর বা নদীতে। কেউ পানীয় জলের জন্য বাধ্য হয়ে ফিল্টার পানি কিনে খাচ্ছেন।

এ দুর্ভোগের কথা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা। এর মধ্যে জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অংচ মং মারমা এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানান, গত ১৫ মে তাঁর এলাকা মধ্যম পাড়ায় সর্বশেষ পানি সরবরাহ করা হয়েছিল। সাধারণত ৪ দিন পর পর ওই এলাকায় পানি সরবরাহ করা হয়। সে হিসাবে ১৯ মে সেই এলাকার মানুষ আবারও পানি সরবরাহ পাবার কথা। কিন্তু পানি না আসায় সরবরাহ কেন্দ্রে ফোন করলে তাঁকে পাম্প হাউজে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণ দেখানো হয়।

উখিংসাইন নামের স্থানীয় এক উন্নয়নকর্মী ফেইসবুক স্ট্যাটাসে জানান, তার এলাকায় ৩ দিন ধরে পানি নেই। সেখানে শহরের বাসিন্দা আয়শা আফরোজ কাজল, মোঃ ফাহিম, জাফর আলমসহ আরো অনেকে নিজ নিজ এলাকায় ৩ থেকে ৬ দিন পর্যন্ত পানি সরবরাহ না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়াও নিজেদের ফেইসবুক ওয়ালে পানি সরবরাহের অনিয়মে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আরো অনেক নাগরিক।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী খোরশেদ আলম ২০ মে শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে জানান, ‘লোডশেডিং এবং বারবার বিদ্যুৎ আসাযাওয়ার কারণে বিদ্যুতের লাইন ছুটে যাচ্ছে। আমাদের মেশিনে কোন সমস্যা নেই, পিডিবি’র লাইনে সমস্যা। আজকে দুই দিন ধরে পিডিবি চেষ্টা করছে। এখনো কাজ চলছে।’

তবে পিডিবি’র লোকজন পাম্প হাউজে কোনো কাজ করছেনা জানিয়ে পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ আমির হোসেন বলেন, পাম্প হাউজের নিজস্ব দু’টি ট্রান্সফর্মারের মধ্যে একটি ট্রান্সফর্মার নষ্ট হয়ে গেছে। গত পরশুদিন সেটা চেক করে উনাদেরকে জানানো হয়েছে। এর পর থেকে উনাদের (জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের) কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি এখন পর্যন্ত আমাদের সাথে যোগাযোগ করেননি। তাছাড়া নিয়ম অনুযায়ী উনাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত ট্রান্সফর্মার ঠিকাদার বা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানেরই মেরামত করার কথা। পিডিবি’র এখানে কোনো ভূমিকা নেই।

এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আরো বক্তব্য জানতে নির্বাহী প্রকৌশলীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শেয়ার করুন