বান্দরবানে খাজনা আদায়ের উৎসব রাজপুন্যাহ ৮ মার্চ

মঙ্গলবার সকালে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বোমাং সার্কেল চীফ উ চ প্রু চৌধুরী। ছবি: মিনারুল হক

বান্দরবান বোমাং সার্কেলের ঐতিহ্যবাহী রাজপুন্যাহ উৎসবের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন বোমাং সার্কেল (রাজা) চীফ উ চ প্রু চৌধুরী। আগামী ৮ মার্চ থেকে স্থানীয় রাজার মাঠে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার সকালে ১৭তম বোমাং রাজা তাঁর নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

বোমাং রাজা জানান, ১৮৭৫ সাল থেকে বোমাং সার্কেলের জুমচাষীদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের এ উৎসব উদযাপিত হয়ে আসছে। সাধারণতঃ প্রতি বছর ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে উৎসবটি হলেও গত ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে সেটা পিছিয়ে মার্চ মাসে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ব্রিটিশ শাসনামল থেকে তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে তিনটি আলাদা সার্কেলের মাধ্যমে প্রশাসনিক কাজ পরিচালিত হয়ে আসছে। এসব সার্কেলের প্রধানরা ‘রাজা’ হিসেবে পরিচিত। তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় সামাজিক বিচার-আচার এবং প্রথাগত বিভিন্ন বিষয়ে নেতৃত্ব দেন। তাছাড়া জুম চাষীদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের পর নিজেদের নির্ধারিত অংশ রেখে বাকিটা সরকারের রাজস্ব তহবিলে জমা দেন তাঁরা। এই খাজনা আদায়ের অনুষ্ঠানটির নামই রাজপুন্যাহ।

কালক্রমে রাঙামাটির চাকমা সার্কেল এবং খাগড়াছড়ির মং সার্কেলের রাজপুন্যাহ জৌলুস হারালেও বান্দরবানের বোমাং সার্কেলে এটি এখনো মহাধুমধামে পালিত হয়। রাজপুন্যাহ উপলক্ষে স্থানীয় রাজবাড়ি মাঠে লোকজ মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে যোগ দেন জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজার হাজার পাহাড়ি-বাঙালি নাগরিক। সর্বশেষ রাজপুন্যাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ২০১৭ সালের ২১ডিসেম্বর।

শেয়ার করুন