প্লাবিত বান্দরবানে পানিবন্দী হাজারো মানুষ

টানা বৃষ্টির প্রভাবে সাঙ্গু নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বান্দরবানের বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার মানুষের চলাচলের জন্য নৌকাই এখন ভরসা। ছবি- খোলা চোখ ডটকম।

টানা ছয়দিন ধরে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে বান্দরবান পার্বত্য জেলার পাহাড়ে বসবাসকারী মানুষের মনে নানা শংকা আর উৎকন্ঠা বেড়ে চলেছে। এরই মধ্যে জেলার সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। বান্দরবান সদর ছাড়াও লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ির বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দী হয়ে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

ওয়াপদা ব্রীজ এলাকা।

গতকাল বুধবার থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতেও বেড়েছে র্দুগত মানুষের ভিড়। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অন্তত এক হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।

নতুন পাড়া বান্দরবান এলাকা।

এদিকে বান্দরবান কেরাণীহাট সড়কের বাজালিয়ায় সড়ক তলিয়ে তিনদিন ধরে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে সারাদেশ থেকে মূলতঃ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে বান্দরবান জেলা। ফলে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। অনেকেই জরুরী কাজ সারতে বাজালিয়ার তলিয়ে যাওয়া সড়ক নৌকা, ভ্যান ও পায়ে হেঁটে পার হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।

বান্দরবান শহরের আলফারুক ইনষ্টিটিউট।

নদীর পানি ঢুকে পড়েছে শহরের বিভিন্ন নি¤œাঞ্চলে। এসব এলাকার মধ্যে বান্দরবান শহরের ইসলামপুর, আর্মি পাড়া, উজানী পাড়া অন্যতম। লামা বাজার এলাকায় পানি ঢুকেছে সকাল থেকে। আজ ( বৃহস্পতিবার) সকালে এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশিরভাগ বাড়িঘর পানির নীচে তলিয়ে গেছে। মানুষ গবাদিপশু ও আসবাবপত্র নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছেন।

তৃতীয় দিনের মতো বান্দরবান কেরাণীহাট সড়ক ছিল পানি নীচে। সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

প্রবল বর্ষনের প্রভাবে পাহাড় ধসের আশংকাও বেড়ে চলেছে। এখনো শহরের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে মানুষ রয়ে গেছেন। নানা সতর্কতা সত্বেও তারা নিজেদের বাড়ী ঘর ছেড়ে যেতে রাজী নন।

বান্দরবান শহরের বাসশষ্টশন এলাকা। হোটেল হিল টনের কাছ থেকে তোলা ছবি।

এর আগে গত শনিবার থেকে রুমা ও থানচিতে নৌ ভ্রমনে নিরুৎসাহিত করে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। এরই মধ্যে গতকাল বুধবার বিকেলে নদী পার হতে গিয়ে রুমায় দুই ব্যক্তি পানিতে ভেসে নিখোঁজ হন। রাতে তাদের একজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে স্

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে উত্তাল রুপ ধারণ করেছে সাঙ্গু নদী।

এদিকে জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে বন্যা ও পাহাড় ধসের মতো প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছেন তাঁরা। পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। খোলা হয়েছে সার্বক্ষনিক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। শহরে দিনভর মাইকিং করা হচ্ছে জনগণকে সতর্ক করে। পুরো জেলায় আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে ১২৬ টি। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক নজর রাখছেন বন্যা পরিস্থিতির ওপর।

জেলা প্রশাসন মো. দাউদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি মোকাবেলা কঠিন হবেনা। এরই মধ্যে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে। জনগণ সচেতন থাকলে পাহাড় ধসে প্রানহানি ঠেকানো যাবে।

শেয়ার করুন