করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশে মসজিদে নামাজ আদায়ের উপর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার। ধর্ম মন্ত্রনালয় এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলছে, আজ থেকে মসজিদে কোন জামাতে ৫ জনের বেশি অংশ নিতে পারবেন না। আর শুক্রবার জুমার নামাজের জামাতে অংশ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ দশ জন। একইসাথে মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়গুলোতেও ধর্মীয় জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলছেন, সরকারি এই সিদ্ধান্ত কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। সরকারি ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মসজিদের খতীব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম ছাড়া অন্য সব মুসল্লিকে নিজ বাড়িতে নামাজ আদায় করতে বলা হয়েছে। সেখানে শুক্রবার জুমার জামাতে অংশগ্রহণের বদলে মুসল্লিদের নিজ নিজ বাড়িতে জোহরের নামাজ আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ সময় সারাদেশের কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলীগ মাহফিল বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজনও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে সবাই যেন ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, জিকির ও দোয়া করেন।
এদিকে বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের দুটি অংশই জানিয়েছে, তারা তাদের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকেও তাদের উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা যেন কোন ধর্মীয় বা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত না হন। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। কোন প্রতিষ্ঠানে এই সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করা হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানানো হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জনসমাগমের মাধ্যমে এই রোগের বিস্তার হচ্ছে। সেই আশঙ্কা থেকে এবং বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সবোর্চ্চ পর্যায়ের সবার পরামর্শে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
গত ২৯শে মার্চ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আহ্বানে দেশের শীর্ষ স্থানীয় আলেমরা মসজিদে মুসুল্লিদের উপস্থিতি সীমিত রাখার ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে আহ্বান জানান। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভাইরাসটি হাঁচি, কাশি, নিঃশ্বাস ও সংস্পর্শের মাধ্যমে সংক্রমিত হওয়ায় মুসলিম স্কলারদের অভিমতের ভিত্তিতে মক্কার কাবা ও মদিনা মুনাওয়ারাসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশের মসজিদে মুসুল্লিদের আগমন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও এ রোগের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রিত না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মসজিদ, মন্দির, গির্জা ও প্যাগোডাসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সর্ব সাধারণের আগমন বন্ধ রাখার জোর পরামর্শ দিয়েছেন।