এক নজরে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ

বাংলাদেশের অন্যতম রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ আর নেই। শুক্রবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে মারা যান তিনি।

মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিরো ৮৮ বছর। তাঁর স্ত্রী সেলিমা আহমদ, চার সন্তান ও নাতি-নাতনি রয়েছে।

অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার মালদাহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের ‘গোহাল বাড়ি’ এলাকায় পরিবারসহ দীর্ঘদিন বসবাস করেন প্রফেসর এমাজউদ্দীন। শিবগঞ্জের আদিনা সরকারি ফজলুল হক কলেজ ও রাজশাহী কলেজের ছাত্র ছিলেন তিনি।

সরকারি কলেজের প্রভাষক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করেন এমাজউদ্দীন। এরপর কানাডার ওন্টারিওর কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি করেন তিনি।

দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগ দেন এমাজউদ্দীন। পরবর্তীতে একই বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ১৯৯২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। এই পদে চার বছর দায়িত্ব পালনের আগে দুই মেয়াদে উপ-উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন এমাজউদ্দীন।

১৯৯৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসরে যাওয়ার পর ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ-ইউডা’র উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এমাজউদ্দীন। এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশের সঙ্গেও সম্পৃক্ততা ছিল তার।

গবেষক-পর্যালোচক হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে অধ্যাপক এমাজউদ্দীনের। তিনি আমৃত্যু তুলনামূলক রাজনীতি, প্রশাসন ব্যবস্থা বাংলাদেশের রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করে গেছেন। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা ৭০ টির অধিক। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক।

শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ১৯৯২ সালে একুশে পদক লাভ করেন অধ্যাপক এমাজউদ্দীন।

এ ছাড়া মাইকেল মধুসূদন দত্ত গোল্ড মডেল, শেরে বাংলা স্মৃতি স্বর্ণপদক, ঢাকা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ যুব ফ্রন্ট গোল্ড মেডেল, মহাকাল কৃষ্টি চিন্তা সংঘ স্বর্ণপদক, জাতীয় সাহিত্য সংসদ স্বর্ণপদক, জিয়া সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম স্বর্ণপদকসহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বহু পুরস্কার-সম্মাননা অর্জন করেন তিনি।

তাঁর মৃত্যুতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিশিষ্টজনেরা শোক প্রকাশ করেছেন।

শেয়ার করুন