আলীকদমে চেয়ারম্যানের জড়িয়ে ধরার ঘটনার ব্যাখ্যা দিলেন ম্রো নারী

বান্দরবানের আলীকদমে উপজেলা চেয়ারম্যানের এক ম্রো নারীকে জড়িয়ে ধরার ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন ওই নারী। সোমবার বিকেলে আলীকদম বাজারে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ির দোতালায় রুমপাও ম্রো নামের ওই নারী ম্রো ভাষায় বক্তব্য দেন। পরে তার ভাই মেনরুম ম্রো সেই কথাগুলো বাংলায় অনুবাদ করে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের বুঝিয়ে দেন।

রুমপাও বলেন, ‘চেয়ারম্যান আবুল কালামের সাথে আমাদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক সম্পর্ক। নির্বাচিত হবার পর আমরা তাঁকে নিজেদের পাড়ায় সংবর্ধনা দিই। অনুষ্ঠান চলাকালে চেয়ারম্যানকে মালা পরিয়ে দেবার পর আমি আবেগপ্রবণ হয়ে কান্না করে ফেলি এবং মাথা ঘুরে পড়ে যাবার উপক্রম হলে চেয়ারম্যান আমাকে ধরে ফেলেন। তিনি না ধরলে আমি গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হতাম। পরে চেয়ারম্যান আমাকে সান্তনা দেন। ওই সময় আমার মা, বাবা, ভাইসহ পাড়ার প্রায় দুই শতাধিক লোক সেখানে উপস্থিত ছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ছবিগুলো চেয়ারম্যান সাহেব নিজেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়েছেন। এসব ছবিকে প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের কিছু লোক বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। যা আমার সম্মানে আঘাত করেছে। এসব ছবি ভাইরাল করার পূর্বে বা মিডিয়াতে প্রকাশের পূর্বে আমার ও আমার পরিবারের বক্তব্য নেয়া উচিত ছিলো। আমি বিকৃত তথ্য প্রচারকারীদের বক্তব্য প্রত্যাহারের আবেদন জানাচ্ছি।’

অন্যদিকে, ম্রো নারীকে ‘জোর করে জড়িয়ে ধরা হয়েছে’ এমন দাবিতে একটি মানববন্ধনের চেষ্টা করে আলীকদম বাজারের কিছু ম্রো যুবক। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধার মুখে তারা সেখান থেকে সরে যায়।

আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রফিক উল্লাহ বলেন, চেয়ারম্যান সাহেবের কয়েকটি ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো পক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করে তাহলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।

উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, ‘নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর লোকজন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের কিছু উগ্র সাম্প্রদায়িক লোকজন এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখানে সহিংসতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। তারাই ফেসবুকে এ ঘটনাটি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। তাছাড়া একাত্তর টিভি আমাকে ‘উপজেলার কিছু উন্নয়নের ব্যাপারে কথা আছে’ বলে টেলিফোনে সংযুক্ত হয়। আমার অনুমতি বা পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই তারা আমাকে বিভিন্ন বিব্রতকর প্রশ্ন করতে থাকে, যা মোটেও কাম্য ছিলোনা। তাদের এহেন ঘটনায় আমার এবং রুমপাও ম্রো এবং তাদের পরিবারের মানহানি হয়েছে। আমি মনে করি মানুষের ব্যক্তিগত মান-সম্মানের ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের আরো যত্নবান হওয়া উচিত। ’

শেয়ার করুন