হত্যার পর ভূতের আছর প্রচারণা: রোমহর্ষক রহস্য উদঘাটন

গৃহবধূ মিনা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের পর সংবাদ সম্মেলন। ছবি: খোলা চোখ

নীলফামারীতে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ মিনা ওরফে সাথী হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার (৩০ মে) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং মামলার বিস্তারিত তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বিপিএম-পিপিএম।

এ সময় সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রহুল আমিন, নীলফামারী থানার ওসি মোমিনুল ইসলাম মোমিন, জেলা গোয়েন্দা(ডিবি)পুলিশের ওসি আফজালুল ইসলাম,নীলফামারী থানার ওসি(তদন্ত) মাহমুদ উন নবি ও ডিবি পুলিশ পরিদর্শক আজমিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার (২৮মে) সকাল সাড়ে সাতটার দিকে খবর পেয়ে সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার এলাকার মনির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের পিছন থেকে মিনা নামের গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই গৃহবধূ দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ থানার শিবরামপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপাড়া এলাকার মৃত ভোম্বল ঋষীর মেয়ে। সে খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের হালিরবাজার এলাকার গণেশ রায়ের ছেয়ে তিমোথিয়ের স্ত্রী।

জানা গেছে, দুই বছর আগে মিনা ও তিমোথিয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে পারিবারিক অশান্তি লেগেই ছিলো তাদের মধ্যে। তদন্ত সুত্রে জানা গেছে, স্বামীর অন্য মেয়ের সঙ্গে পরকীয়া, সন্তান না নেওয়ার অনিহা ও শ্বশুরের কুপ্রস্তাবের কারণে বুধবার রাতে বাবার বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্বামীর বাড়ি থেকে বের হন মিনা। পথে স্বামী তিমোয়িথা, শাশুড়ি শিউলি ও কাকি শাশুড়ি মিনতি রানী ঘটনাস্থল থেকে মিনাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

পুলিশ সুপার মোখলেছুর রহমান জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা অত্যন্ত চতুরভাবে গৃহবধূকে হত্যা করেও খোঁজ করতে থাকে। তার শরীরে জ্বীন-ভূতের আছর রয়েছে বলে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে প্রচারণা চালায়।

ঘটনার পর থেকে নীলফামারী থানা পুলিশ, জেলা পুলিশের একটি টিম, সিআইডির তদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, হত্যাকান্ডের সঙ্গে উল্লেখিত ব্যক্তিরাই জড়িত এবং পারিবারিক কারণে তাকে হত্যা করা হয়।

হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় মিনার ভাই সুকুমার ঋষী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আদালতে স্বামী, শাশুড়ি ও কাকি শাশুড়ি হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।গত শুক্রবার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে ।

শেয়ার করুন