শহর বিক্রি হবে নিউজিল্যান্ডে

বাড়ি বিক্রি হয়, জায়গা বিক্রি হয়। আরও অনেক কিছুই বিক্রির সংবাদও পাওয়া যায়। কিন্তু পুরো শহর বিক্রি! এমনটা ঘটতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ডে।

ছোটখাটো কোনো শহর নয়। নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণের দ্বীপ ডুনেডিনের লেক ওয়াইতাকি ভিলেজ নামের এই শহরের আয়তন ১৮০ বর্গ কিলোমিটার, যা বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২৮ লাখ মার্কিন ডলারে।

আদতে এটি একটি পরিত্যক্ত শহর। এটি গড়ে উঠেছিল ১৯৩০ সালে। ওই সময় লেক ওয়াইতাকির পার্শ্ববর্তী এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য যে শ্রমিকেরা কাজ করেছেন, তাঁদের পরিবারের থাকার জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল শহরটি। বাঁধ নির্মাণের পর ১৯৮০ সালে এটি জনমানবশূন্য হয়ে যায়। কারণ, পরে ওই বাঁধের জন্য প্রতিদিন এত মানুষের আর প্রয়োজন পড়েনি।

এই জনমানব শূন্য শহরে পরবর্তী সময়ে কর্তৃপক্ষ বসতি স্থাপনের চেষ্টাও করেছে। কিন্তু কাজ হয়নি। কারণ, জনাথন নোলানের সেই ‘ওয়েস্ট ওয়ার্ল্ডের’ মতো ভুতুড়ে শহরে কেউ বসবাস করতে চাননি।

কিন্তু তাই বলে শহরটি নষ্ট হয়ে যায়নি। কারণ, ওই শহরে এখনো আটটি বাড়ি আছে। আছে রেস্তোরাঁ। সেই রেস্তোরাঁয় বাণিজ্যিক রান্নাঘর, কার পার্কিংয়ের জায়গাসহ সব ধরনের সুবিধাই অক্ষত আছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই এলাকার কদর খানিকটা বেড়েছে। নিউজিল্যান্ডের আবাসনবিষয়ক সংস্থা ওয়ান এজেন্সির কেলি মিলমাইন বলেন, আল্পস টু ওশান নামে সাইক্লিং প্রতিষ্ঠান সেখানে সাইক্লিং শুরু করেছে। ফলে পর্যটনের সম্ভাবনা উঁকি দিয়েছে।

তবে এই একটি সম্ভাবনাই শেষ নয়। চলতি বছরে নিউজিল্যান্ডের আইনপ্রণেতারা নতুন একটি আইন পাস করেছেন। এতে বলা হয়েছে, বিদেশিরাও এই শহর কিনতে পারবেন। এই আইনের পেছনে আরেকটি কারণ আছে। তা হলো, নিউজিল্যান্ডে সাম্প্রতিক সময়ে আবাসন খাতে ব্যয় এতটা বেড়েছে যে স্থানীয় বাসিন্দারা এই ব্যয়ভার বহন করতে পারবে না।

গত আগস্টে এই আইনটি পাস করা হয়। এরপর নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী ডেভিড পার্কার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জন্মসূত্রে যারা নিউজিল্যান্ডের নাগরিক, তারা এখানে বাড়ি কিনতে পারবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালির উদ্যোক্তা পিটার থিয়েল নিউজিল্যান্ডে জায়গা কিনে দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। যদিও এটি ঘটেছে ওই আইন পাসের আগে। এটি একটি উদাহরণ যে কীভাবে বাইরের উদ্যোক্তারা জায়গা কিনে নাগরিক হতে পারেন।

শেয়ার করুন