বান্দরবানে হেলমেট বিক্রির ধুম!

বান্দরবানে ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতায় হেলমেট বিক্রির ধুম পড়েছে। ছবি- মং খিং মারমা

ট্রাফিক পুলিশের তৎপরতায় বান্দরবান শহরের মটরবাইক চালকদের মধ্যে হেলমেট কেনার ধুম পড়েছে। যাদের হেলমেট নেই তারা সবাই ছুটছেন খুচরা যন্ত্রাংশের দোকানগুলোতে। কারণ, হেলমেট ছাড়া রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অবলম্বন করছে বান্দরবান ট্রাফিক বিভাগ।

বুধবার শহরের হেলমেটের দোকানগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, থরে থরে সাজানো নতুন হেলমেট। যেখানে গত ছয় মাসে একটিও হেলমেট বিক্রি হয়নি, সেখানে গত তিন দিনে ৫০টিরও বেশি হেলমেট বিক্রি হয়ে গেছে। জানালেন, শহরের সার্কিট হাউজ সংলগ্ন রিয়াদ অটো ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মালিক মোঃ মাইনুদ্দিন। তিনি জানান, আগে খুব কদাচিৎ কেউ হেলমেট কিনতো। ট্রাফিক পুলিশ এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করায় হেলমেট বিক্রি বেড়ে গেছে। আগে একটি হেলমেটে দেড়শ’ থেকে দুইশ’ টাকা লাভ করলেও এখন বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা পঞ্চাশ-একশ’ টাকা লাভে একেকটি হেলমেট বিক্রি করছেন।

মটরবাইক চালক রিয়াজ আহমেদ জানান, শহরের রাস্তায় রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ পাহারা বসিয়েছে। হেলমেট ছাড়া চলাচলকারীদের মটরবাইক আটক রেখে হেলমেট নিয়ে আসার পর ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। কারো কারো বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।

আরেক মটর বাইক চালক থোয়াই হ্লা মং জানান, বুধবার ডলু পাড়া থেকে বান্দরবান এসে ট্রাফিক পুলিশের জরিমানার শিকার হয়েছি। আগে জানা থাকলে হেলমেট নিয়েই আসতাম। আমরা সচরাচর হেলমেট পরে মটর সাইকেল চালাতে অভ্যস্ত না।

জেলা সদরের একটি উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করেন রনি চাকমা। তিনি বলেন, হেলমেট ব্যবহার আমাদের জন্যেই ভালো। তবে বাইক পার্কিং করে রেখে কোথাও যাবার সময় হেলমেট বহন করে নিয়ে যাওয়াটা বাড়তি ঝক্কি। আবার মটরবাইকের ওপর হেলমেট রেখে গেলেও চুরি হয়ে যাবে। পুলিশ হেলমেট পরতে বাধ্য করতে পারে। কিন্তু হেলমেট চুরি ঠেকাতে পারবেতো?

বান্দরবান সদর ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট সালাউদ্দিন মামুন জানান, মটরবাইক চালকদের নিরাপত্তার জন্যেই ১ এপ্রিল থেকে হেলমেটবিহীন চলাচলের ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। প্রথম দিকে যাদের হেলমেট নেই তাদের বাইক আটক রেখে হেলমেট আনার পর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এতে একই হেলমেট দেখিয়ে অনেকেই বাইক ছাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এটা টের পাবার পর আমরা মামলা দিতে শুরু করেছি। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১৪৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২শ’ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা হচ্ছে। শহরের হেলমেটের দোকানগুলোকে পর্যাপ্ত হেলমেট এনে মজুদ রাখার জন্যেও অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বান্দরবান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াছিন আরাফাত ৩ এপ্রিল এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ’মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীরা হেলমেট ব্যবহার করুন। এতে দুর্ঘটনার সময় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। বিঃদ্রঃ হেলমেট না পড়ার কারনে কোথাও আটকে গেলে ছেড়ে দেয়ার তদবীরের জন্য দয়া করে আমার কাছে ফোন করা থেকে বিরত থাকুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ‘

৩১ মার্চ বান্দরবান শহরের রেডিও স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় মটরবাইকের সাথে বাসের ‍মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন মারা যাবার পর ১ এপ্রিল থেকে হেলমেটবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে ট্রাফিক পুলিশ।

শেয়ার করুন