তদবিরবাজেরাই বড় দুর্নীতিবাজ: দুদক চেয়ারম্যান

র্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতি, তদবির, ক্ষমতাবানদের বিশেষ প্রভাব নির্মূল করা প্রয়োজন। তদবিরবাজেরাই সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ, তারা পদ্ধতি ভাঙতে চায়। কিন্তু মানুষ আর তদবিরবাজদের ছাড় দিতে চায় না। তাদের শাস্তি পেতেই হবে।

চাঁদপুরে ‘দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা, দুর্নীতির অভিযোগের প্রকৃতি’ শিরোনামে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন ইকবাল মাহমুদ। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আজ বুধবার দুপুরে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘অনেকেই বলেন আমাদের রাজনীতি আছে, উন্নয়ন আছে, নৈতিকতা আছে, সততা আছে, মূল্যবোধ আছে, সবই আছে। কিন্তু দুর্নীতি, তদবির, অবৈধ প্রভাব কি নেই? দুর্নীতির যে ব্যাপকতা রয়েছে, এভাবে চললে অনেক অর্জনই বিসর্জন হয়ে যাবে। আমরা এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে চাই।’ তিনি বলেন, দুর্নীতিমুক্ত ও হয়রানিমুক্ত সরকারি পরিষেবা প্রদান করা আমলাতন্ত্র ও জনপ্রতিনিধিদের কোনো দয়ার বিষয় নয়, এটা নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার।

ইকবাল মাহমুদ বলেন, প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দোষ দিয়ে লাভ নেই। এ ক্ষেত্রে অভিভাবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা—সবাইকেই দায় নিতে হবে। এভাবে যারা সার্টিফিকেট নিচ্ছে তাদের দক্ষতা, সক্ষমতা ও মননশীলতা ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘দেশে সক্ষম শিক্ষিত মানুষের চাকরির অভাব নেই। যদি অভাব থাকত, তাহলে লক্ষাধিক বিদেশি বাংলাদেশে চাকরি করতে আসত না। আমাদের দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। অনেক স্কুল হয়েছে, স্কুলে যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছে, শিক্ষা উপকরণ আছে, শিক্ষক আছেন কিন্তু শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নেই। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা থাকলে আমাদের সন্তানেরা কোচিং সেন্টারে যেত না, প্রশ্নপত্রও ফাঁস হতো না।’

নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিকাশের লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন দেশের প্রায় ২২ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সততা সংঘ গঠন করেছে। উত্তম চর্চার বিকাশে তাদের নিয়ে নানাবিধ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানান ইকবাল মাহমুদ।

আলোচনা সভার শুরুতে দুদক মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. জাফর ইকবাল একটি নমুনা পেপার উপস্থাপন করেন। তাতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, ভূমি রেকর্ড জরিপ, স্বাস্থ্য, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষসহ (বিআইডব্লিউটিএ) বিভিন্ন দপ্তরের যেসব অভিযোগ দুদকে আসে—তা তুলে ধরা হয়।

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. আবদুস সবুর মণ্ডলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা আক্তারসহ বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভার চেয়ারম্যান, মেয়রসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বক্তৃতা করেন।

শেয়ার করুন