ইরাকে মার্কিন বাহিনীর হাতে ইরানি জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার জেরে আজ শুক্রবার তেলের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্বের প্রধান শেয়ারবাজারগুলোতে পতন দেখা দিয়েছে। লন্ডন, ফ্রাঙ্কফুর্ট ও প্যারিসের শেয়ারবাজার নিম্ন সূচক নিয়ে দিন শুরু করে। সেই সঙ্গে হংকংয়েও হ্রাস পায়। শাংহাইয়ে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। আর জাপানের বাজার ছিল বন্ধ।
বার্তা সংস্থা এপি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইরানের এলিট বাহিনী ‘কুদস ফোর্স’ প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানি বিমান হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনায় মার্কিন ও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মাঝে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
সোলাইমানি হত্যার জবাব ইরান কীভাবে দেবে, তা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে অতীতে দেখা গেছে, তেহরান তেলের জাহাজ জব্দ ও মার্কিন সামরিক বাহিনীর ড্রোন ভূপাতিত করার ঘটনা ঘটিয়েছে। শুক্রবার লন্ডনে অশোধিত তেলের আন্তর্জাতিক দাম ব্যারেল প্রতি ২.১০ ডলার বেড়ে ৬৮.৩৬ ডলারে ওঠে যায়। তবে একপর্যায়ে দাম বৃদ্ধি পেয়েছিল প্রায় ৩ ডলার।
নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে প্রতি ব্যারেল অশোধিত তেলের দাম ১.৭৯ ডলার বেড়ে ৬২.৯৭ ডলার হয়েছে। তেল উৎপাদনকারী মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডে তেলের দাম বেড়েছে এবং তাইওয়ানে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে।
শেয়ার বাজারে দিনের শুরুতে লন্ডনের এফটিএসই সূচক ০.৫ শতাংশ, জার্মানির ডিএএক্স সূচক ০.৯ শতাংশ ও ফ্রান্সের সিইসি সূচক ০.৫ শতাংশ কমে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ও ডোও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ হ্রাস পায় ০.৮ শতাংশ।
এশিয়াতে হংকং ০.৩ শতাংশ, শাংহাই ১.৫, ভারত ০.৫ শতাংশ সূচক হারিয়েছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় ১ পয়েন্ট ও অস্ট্রেলিয়ায় ০.৬ শতাংশ সূচক বেড়েছে।
কে এই জেনারেল কাসেম সোলাইমানি?
ইরানের শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি জেনারেল সোলাইমানি। তার কুদস বাহিনী সরাসরি দেশটির প্রধান নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির কাছে রিপোর্ট করে। ১৯৯৮ সাল থেকে মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ইরানের কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
ইরান রেভোলিউশনারি গার্ডসের এই অভিজাত বাহিনীটি দেশের বাইরে চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়ে থাকে।
জানা গেছে, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে বাশার আল-আসাদের ইরান সমর্থিত সরকারকে মদদ দেয়া এবং ইরাকে ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জেনারেল সোলাইমানি।
ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় ১৯৮০র দশকে দায়িত্ব পালন করার সময় তিনি প্রথম পরিচিতি লাভ করেন।