লাইনে দাঁড়িয়ে ঘুষের টাকা ফেরত নিলেন পল্লী বিদ্যুৎের গ্রাহকরা

ছবি: সংগৃহীত

ঘুষের টাকা ফেরত পাবার ঘটনা বাংলাদেশে বিরল। তবে এমন ঘটনা সত্যিই ঘটেছে। বিদ্যুতের লাইন পাইয়ে দেয়ার প্রলোভনে ৮৭ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ঘুষ নেয়া হয়েছিল দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা। এবার সেই টাকা গ্রাহকদের ফেরত দিলেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ময়মনসিংহের জি এম মো. মকবুল হোসেন। আর ঘুষ নেয়ার অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে পল্লী বিদ্যুতের ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া শাখার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লাকে।

২ সেপ্টেম্বর বুধবার ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পল্লী বিদ্যুতের এক উঠান বৈঠকে ৮৭ জন গ্রাহকের মধ্যে ঘুষের টাকা ফেরত দেয়া হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত চার বছর আগে রঘুনাথপুর গ্রামের চারটি পাড়া থেকে পল্লী বিদ্যুৎ ফুলবাড়ীয়া জোনাল অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লা ৮৭ জন গ্রাহককে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার নামে ঘুষ হিসেবে এক হাজার ২০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়।

দীর্ঘ দিনে গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ না পাওয়ায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। বিদ্যুৎতের খুঁটি স্থাপনে অনিয়মের ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ময়মনসিংহ-১ এর ডিজিএম (কারিগরি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান তদন্তে আসলে এলাকাবাসী তার কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করে অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আবুল বাশার মোল্লার ঘুষ বাণিজ্যের ঘটনাটি প্রমাণিত হয়।

পরবর্তী ঘুষ নেয়ার অভিযোগে আবুল বাশার মোল্লাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অভিযুক্ত আবুল বাশার মোল্লা কোনো উপায়ন্ত না দেখে ঘুষ হিসেবে নেয়া টাকা জিএম মো. মকবুল হোসেনের কাছে হস্তান্তর করে।

আজ বুধবার বিকেলে পল্লী বিদ্যুতের উঠান বৈঠকের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘুষের টাকা গ্রাহকদের মধ্যে ফিরিয়ে দিয়েছেন জিএম মো. মকবুল হোসেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিজিএম (কারিগরি) মো.  মোস্তাফিজুর রহমান, ডিজিএম অনিতা বর্ধন প্রমুখ।

রঘুনাথপুর পশ্চিম পাড়ার মোস্তফা বলেন, ‘বিদ্যুতের জন্য ঘুষ দেওয়ার চার বছর পর ঘুষের পাঁচ হাজার টাকা ফেরত পেয়েছি। কল্পনাও করতে পারিনি গ্রামের মানুষ ঘুষের টাকা ফেরত পাবেন।’

শেয়ার করুন