মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অনেক ক্ষমতাবান মনে হলেও আসলে কিন্তু তার ক্ষমতা সীমিত। আসুন জেনে নিই তার ক্ষমতা সম্পর্কে:
১. মার্কিন সংবিধান: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার বছর। কোন প্রেসিডেন্ট দুইবারের বেশি নির্বাচিত হতে পারেন না। প্রেসিডেন্ট সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে কাজ করেন এবং ফেডারেল প্রশাসন নিয়োগ করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস আইন প্রণয়ন করার পর সেই আইন প্রয়োগের দায়িত্বও প্রেসিডেন্টের।
২. সরকারের প্রধান তিন শাখা: যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের তিনটি প্রধান শাখা রয়েছে। বিচারবিভাগ, আইনপ্রনয়ন বিভাগ ও প্রশাসনিক বিভাগ। প্রেসিডেন্ট কোন অপরাধীকে ক্ষমা করতে পারেন এবং ফেডারেল বিচারক মনোনীত করতে পারেন, কিন্তু তা সিনেট থেকে অনুমোদিত হতে হয়। প্রেসিডেন্ট মন্ত্রিসভার সদস্য ও রাষ্ট্রদূতও নিয়োগ দিতে পারেন, কিন্তু এসব নিয়োগেও সিনেটের অনুমোদন লাগে। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আইনপ্রণয়ন বিভাগ প্রশাসনিক বিভাগের ক্ষমতাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. স্টেট অফ ইউনিয়নের ক্ষমতা: প্রেসিডেন্টকে কিছুদিন পরপর কংগ্রেসের কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে অবহিত করতে হয়। প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যকে ‘স্টেট অফ ইউনিয়ন’ বলা হয়।
৪. ‘না’ বলতে মানা: প্রেসিডেন্ট কোনো আইনে ভেটো দিতে পারেন, বা ‘না’ বলতে পারেন। কিন্তু যদি কংগ্রেসের দুই কক্ষ, সেনেট ও হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের দুই-তৃতীয়াংশ কোন আইন প্রণয়নের পক্ষে মত দেয় তাহলে প্রেসিডেন্টের ভেটো সত্ত্বেও আইন কার্যকর হতে পারে।
৫. পকেট ভেটো: কিন্তু মাঝেমাঝে প্রেসিডেন্ট কোনো আইন প্রণয়নকে একটি কৌশলে আটকে রাখতে পারেন। এই কৌশলকে বলা হয় ‘পকেট ভেটো’। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট কোন আইন নিজের কাছে আটকে রাখতে পারেন। এর ফলে কংগ্রেসে অনুমোদিত হলেও প্রেসিডেন্টের কাছে আটকে থাকার কারণে আইনটি কার্যকর হতে পারে না। এই আইনের মত অনেক বিষয়ে সংবিধান ও সুপ্রিম কোর্ট প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাকে স্পষ্ট করে নির্ধারিত করেনি।
৬. নির্বাহী ক্ষমতা: প্রেসিডেন্টের আরেকটি বিখ্যাত ক্ষমতার নাম হচ্ছে ‘এক্সিকিউটিভ অর্ডার’ বা নির্বাহী ক্ষমতা। এর মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট সরকারি কর্মকর্তাদের কোন বিষয়ে নির্দেশ দিতে পারেন। কিন্তু তার মানে এই নয় প্রেসিডেন্ট যা খুশি তাই নির্দেশ দিতে পারেন। আদালত ইচ্ছে করলে এই নির্দেশ বাতিল করতে পারে অথবা কংগ্রেস এই নির্দেশের বিপরীতে আরেকটি আইন প্রণয়ন করতে পারে।
৭. চুক্তির ক্ষমতা: প্রেসিডেন্ট প্রয়োজন মনে করলে আরেকটি দেশের সাথে চুক্তি বাতিল করতে পারেন, কিন্তু সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন লাগবে।
৮. সামরিক বাহিনীর প্রধান: প্রেসিডেন্ট কমান্ডার ইন চিফ বা সামরিক বাহিনীর প্রধান। কিন্তু যেকোনো যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে কংগ্রেস। তবে এই নিয়মটি পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। কারণ, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াও কিছু সময় প্রেসিডেন্ট সামরিক সংঘর্ষে সৈন্যদের অংশ নেবার অনুমোদন দিতে পারেন।
৯. অভিশংসন: প্রেসিডেন্ট যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করেন বা কোন অপরাধ করেন, তবে হাউজ অভ রিপ্রেজেন্টিটিভ তাকে সরানোর জন্য ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসন শুরু করতে পারেন।