ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শিল্প স্থাপন, বাড়ি তৈরি, গাড়ি কেনাসহ দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে ঋণ দিয়ে থাকে বিভিন্ন ব্যাংক। এবার বিয়ের খরচ জোগাতে ঋণ সহায়তা দিতে শুরু করেছে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক। জেনে নিন এসব ঋণ দিচ্ছে কোন কোন ব্যাংক।
ট্রাস্ট ব্যাংক: ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় বিয়েসহ আরো বেশ কিছু প্রয়োজনে ঋণ-সুবিধা দেয় ব্যাংকটি। তবে ‘বিয়ের ঋণ’ নামে সরাসরি কোনো ঋণ পণ্য নেই। গ্রাহকের প্রয়োজনভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকার ঋণ দেয়া হয়। এক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি এ ঋণের দুই ধরনের সূদের হার রয়েছে। চাকরিজীবীদের বেতনের বিপরীতে যে ঋণ-সুবিধা দেয়া হয়, তার বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৪ শতাংশ। আর ব্যবসায়ীসহ অন্যদের বেলায় এ ধরনের ঋণের বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ।
ব্যাংক এশিয়া: বিয়ের জন্য সরাসরি কোনো ঋণ-সুবিধা না থাকলেও ব্যক্তিগত ঋণের আওতায় ঋণ নিয়ে তা বিয়ের খরচ হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাংকটি সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিচ্ছে। ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়ের বিভিন্ন শ্রেণির পেশাজীবীদের এ ঋণ দেয়া হয়। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত।
আইএফআইসি ব্যাংক: এই ব্যাংকও গ্রাহকভেদে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ‘বিয়ের ঋণ’ দিয়ে থাকে। এ ঋণের মেয়াদ সর্বনিম্ন এক থেকে সর্বোচ্চ তিন বছর। বার্ষিক সুদের হার সাড়ে ১৬ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে যদি কোনো গ্রাহক তিন বছর মেয়াদের জন্য এক লাখ টাকা ঋণ নেন, তাহলে ওই গ্রাহককে প্রতি মাসে ঋণের কিস্তি বাবদ পরিশোধ করতে হবে তিন হাজার ৫৪২ টাকা।
প্রাইম ব্যাংক: প্রাইম ব্যাংকের তথ্যমতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি সংস্থা, বিদেশি সংস্থা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিক—সবার জন্য ‘বিয়ের ঋণের’ বন্দোবস্ত রয়েছে। পেশাভেদে ১৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা মাসিক আয় বা বেতনের যে কেউ এ ঋণ নিতে পারবেন। গ্রাহকভেদে সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বিয়ের ঋণ দিচ্ছে প্রাইম ব্যাংক। মাসিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য এ ঋণের মেয়াদ পাঁচ বছর। ঋণের বার্ষিক সুদের হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ।
ব্যাংকগুলো বিয়ের খরচ জোগাতে ঋণ দিলেও সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, আধুনিক ভোগবাদের জগতে বিয়েও একটি জৌলুসপূর্ণ আয়োজনে পরিণত হয়েছে। আয়ের সাথে সঙ্গতি না রেখেই অনেকে প্রতিযোগিতার মনোভাব থেকে নানারকম বিলাসী আড়ম্বরে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকেন। যা পরবর্তীতে পারিবারিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আয় বুঝে ব্যয় করতে পারলে ঋণ নেবার প্রয়োজন হবার কথা নয়। এক্ষেত্রে বর ও কনের পরিবার সচেতন হলে বিয়ের অপচয় অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।