নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় চলছে মাছ ধরার উৎসব। খাল-বিল ও নদী নালার পানি কমতে শুরু করেছে। পানিতে টান পড়েছে তাই মাছ ধরার এখনই সময়। উপজেলার ফসলি মাঠগুলো এখনো আবাদের উপযোগী হয়ে উঠেনি। তাই কৃষকের হাতেও তেমন কাজ নেই। এ অবসরে অল্প পানিতে মাছ শিকারের উৎসবে মেতে উঠেছেন সবাই।
এলাকায় এখন বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। দলবদ্ধ হয়ে পানি শুকিয়ে আবার কোথায় পলো দিয়ে মাছ ধরা। দিনে রাতে সুত বড়শি দিয়ে নদী থেকে ধরা হচ্ছে বোয়াল মাছ। বড়শিতে খাবার দিয়ে ফেলা হয় নদীর পানিতে। রাতে আলো জ্বালিয়ে নদীর পাড়ে সুত বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দেখা যায়। তবে সুত বড়শি দিয়ে মাছ ধরতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এছাড়া ছোট ডোবায় গ্রামের মানুষরা পানি শুকিয়ে মাছ ধরছেন। মাথা ও কোমরে আটসাট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরছেন সবাই।
সকাল থেকেই শুরু হয় তাদের এই মাছ ধরা। চলে বিকেল পর্যন্ত। দলবেধে সারিবদ্ধ হয়ে পলো দিয়ে শোইল, টাকি ও বোয়াল মাছ ধরছেন। নদীর স্বল্প পানিতে শত জনের একটি দল একদিকে পলো নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর অপরপ্রান্ত থেকেও শত জনের সারিবদ্ধ দল পলো চাপিয়ে মাছ ধরতে সামনের দিকে এগিয়ে আসেন। কবে কোথায় মাছ ধরা হবে উপজেলার হাট ও বাজারে আগের দিন মাইকিং করে প্রচার করা হয়। অনেকে আবার মোবাইল ফোনে জেনে নেন। অনেকে ৬-৭ কিলোমিটার হেঁটে আবার অনেকে ১০-১২ কিলোমিটার দূর থেকে ভটভটি নিয়ে আসেন।
বদলগাছী ছোট যমুনা নদীতে দেখা মেলে পলো দিয়ে মাছ ধরার এমনই দৃশ্য। উপজেলার আধাইপুর থেকে মাছ ধরতে আসা বিকাশ বলেন, ১০ কিলোমিটার দূর থেকে সকালে ভটভটি করে প্রায় ১০০ জন এই নদীতে চাবি জাল দিয়ে মাছ ধরতে এসেছেন। সারাদিনে ছোট একটি বোয়াল মাছ পেয়েছেন। এখন আর আগের মতো বড় মাছ পাওয়া যায় না। তবুও এভাবে মাছ ধরতে আনন্দ লাগে।
কোলারপালসা গ্রাম থেকে আসা এমদাদুল বলেন, সপ্তাহে দু’তিন দিন করে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আমরা পলো দিয়ে মাছ ধরছি। আমরা প্রায় দুই শতাধিক মানুষ এসেছি মাছ ধরার জন্য। প্রতিবছরই এই সময় এ অঞ্চলের মানুষ পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসবে মেতে উঠি। আমরা দেড় কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছ পেয়েছি।