মিয়ানমার সরকার রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করার ছ’মাস পরেও জাতিগত নিধন অভিযান বন্ধ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক একজন কর্মকর্তা।
জাতিসংঘের এই দূত বলেছেন, সেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব’ অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলছেন, এখনও বহু মানুষ না খেয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
রাখাইনে রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক অভিযান শুরু করার ছ’মাস পরেও এসব অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সহকারী মহাসচিব এন্ড্রু গিলমোর।
বাংলাদেশে চারদিনের সফর শেষে তিনি বলেছেন, সংখ্যালঘু এই মুসলিম বর্মী জনগোষ্ঠীর উপর এখনও পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, তবে এর ধরনের কিছুটা পরিবর্তন ঘটেছে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে অতি সম্প্রতি যারা বাংলাদেশে এসে ক্যাম্পে উঠেছেন তাদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন যে গ্রাম থেকে লোকজন গুম হয়ে যাচ্ছে।
তারা বলেছেন, বিশেষ করে গ্রামের নারী ও মেয়ে-শিশুরা নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে এবং তাদেরকে পরে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
মি. গিলমর আরো বলেন, বর্তমানে মিয়ানমারের যে পরিস্থিতি তাতে সেখানে ফিরে গিয়ে নিরাপদে বসবাস করা অসম্ভব।
তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার সারা বিশ্বকে এটা বলতে ব্যস্ত যে তারা রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত, কিন্তু ঠিক একই সময়ে তার বিভিন্ন বাহিনী রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশের দিকে পাঠিয়ে দিচ্ছে।”
গত অগাস্ট মাসের পর থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শুরু থেকেই বলে আসছে যে তারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে।
এন্ড্রু গিলমোর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় কক্সবাজার ঘুরে দেখে বলেন, “সেখানে আমি যা দেখেছি, যা শুনেছি তা থেকে অন্য কিছু উপসংহার টানা যায় না।”
তিনি বলেন, “হত্যা ও গণ-ধর্ষণের পরিবর্তে এখন সেখানে একটু কম মাত্রায় সন্ত্রাস চালানো হচ্ছে, লোকজনকে ক্ষুধার্ত থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে।”
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলাপ আলোচনা চলছে তবে গত সপ্তাহে সীমান্তে বর্মী সৈন্যের সমাবেশ ঘটানোয় নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।