আগামী বছরের জুনে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হবে এমনটাই ঠিক ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারি আর এবার অতিরিক্ত বন্যায় এ সেতু নির্মাণ কাজে বাধা সৃস্টি করেছে। তাই আগামী জুনে কাজ শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ২০২২ সালের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় বেশি লাগার জন্য মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক সংস্থার (কনস্রদ্বাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্ট সিএসসি) মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানোর বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এর আগেও দুই দফা পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ বেড়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যয় বেড়েছে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সময় বাড়িয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। নদীশাসনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম কাঙ্ক্ষিত হারে বাস্তবায়ন না হওয়ায় সময়সীমা আবার বাড়িয়ে করা হয় ২০২১ সালের জুন মাস। সেই লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সেতু বিভাগ। কিন্তু বৈশ্বিক করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে কাজের গতি কমে গেছে। বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার পাওয়া প্রকল্প পদ্মা সেতু প্রকল্পে খরচ হচ্ছে ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ।
পদ্মা বহুমূখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন ( কেইসি) অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসকে নিয়োগ দেয় সরকার। যার মেয়াদ শেষ হবে সেপ্টেম্বরে। মূল প্রকল্পের সময় বাড়ানোর ফলে পরামর্শক সংস্থার মেয়াদ বাড়ানো হয়। বুধবার ক্রয় কমিটির বৈঠকে এর দর প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর হতে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত অথার্ৎ ৩৪ মাস বাড়ানো হয়। এতে সরকারের অতিরিক্ত খরচ হবে ৩৪৮ কোটি ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে পদ্মা সেতুর কাজ সময়মত করতে পারিনি। এছাড়া এ বছর যে ভয়াবহ বন্যার কারণেও কাজ ব্যহত হয়। সে জন্য নদী শাসন মূল সেতুর তদারকির দায়িত্বে থাকা কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন (কেইসি) অ্যান্ড এএমপি অ্যাসেসিয়েটসের মেয়াদ ৩৪ মাস বাড়ানোর বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে পরামর্শক সংস্থার মেয়াদ বাড়ানোর ফলে মূল সেতুর নির্মাণ খরচ বাড়বে কি-না -জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল সেতুর ব্যয় যা ছিলো তাই থাকবে।