রফিকুল ইসলাম, লামা,বান্দরবান।। বান্দরবানের লামা উপজেলার বিভিন্ন পাথর কোয়ারিতে পাথর আহরণে উচ্চ মাত্রার ক্ষতিকারক বিস্ফোরক ব্যবহার করা হচ্ছে। বে-আইনীভাবে বিস্ফোরক ব্যবহার করে পাহাড়ের পাথর আহরণ করতে গিয়ে আহত হচ্ছেন পাথর উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক। আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন অনেকেই।
এদিকে বেআইনি এ র্কমকান্ডকে গোপন রাখতে আহত শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে চিকিৎসা থেকেও। পাথর কোয়ারিগুলোতে বিষ্ফোরক ব্যবহার করতে গিয়ে হতাহতের অধিকাংশ খবরই গোপনে থেকে যায়।
জানা গেছে, গত সোমবার দুপুরে লামার হরিণঝিরির পশ্চিমপাশের কাঠাঁলছড়া এলাকায় গান পাউডার দিয়ে কোয়ারিতে পাথর বিস্ফোরণ করতে গিয়ে মো. জাকের (৪৫) নামে এক শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
আহত জাকের লামা পৌরসভার হরিণঝিরি এলাকার সালেহ আহমদ এর ছেলে।
বিস্ফোরণে পাথর শ্রমিক জাকের এর বাম হাতের কয়েকটি আঙ্গুল উড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আহত শ্রমিককে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালেও নেয়নি মালিক পক্ষ। আহত শ্রমিক জানান, গ্রাম্য চিকিৎসক দিয়ে কোনমতে হাতের চিকিৎসা করানো হয়েছে তার। এ বিষয়ে মালিক কাউকে কিছু না জানাতে নিষেধ করায় তিনি বিষয়টি গোপণ করেছেন বলে জানান জাকের।
তবে এ ঘটনা জানা-জানির পর আহত অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। পাথর বিস্ফোরণে বিগত দিনে আহত অনেকে জানায়, আহত হওয়ার পরে প্রথমে লোক দেখানো কিছু সহযোগিতা করলেও পরে আমাদের খোঁজ খবর নেয়না পাথর ব্যবসায়ীরা। বিনা চিকিৎসায় ধীরে ধীরে স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়।
জানা গেছে, কাঠাঁলছড়া পাথর কোয়ারির মালিক লামা পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হাবিল মিয়া। কাউন্সিলর ও পাথর ব্যবসায়ী হাবিল মিয়া বলেন, আমি নগদ টাকা দিয়ে পাথর ক্রয় করি। কারা কিভাবে পাথর সংগ্রহ করে সেটা দেখা আমার বিষয় নয়। তবে দূর্ঘটনাস্থ পাথর কোয়ারিটি তার বলে দাবি করেন। বিস্ফোরক দ্রব্যের বিষয়ে কোন অনুমতি আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এই বিষয়ে লামা থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, লিখিত অনুমতি (লাইসেন্স) ছাড়া কোন ব্যক্তি বিস্ফোরক দ্রব্য বহন বা সংরক্ষণ করলে সে বিস্ফোরক আইনে অপরাধী হবেন।
পাহাড় কেটে পাথর সংগ্রহ ও বিস্ফোরক দ্রব্যের ব্যবহারের বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার খিনওয়ান নু বলেন, এখনও পর্যন্ত লামার কোথাও পাথর আহরনের অনুমতি দেয়া হয়নি।কেউ পাথর আহরণ করে থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে।