তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে জাতিসংঘ। গত ১০ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, চলতি মাসের শেষ থেকে বন্ধ হয়ে যেতে পারে সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজকর্ম। এমনকি আগামী নভেম্বর মাসে জাতিসংঘের সচিবালয়ের প্রায় ৩০ হাজার কর্মী বেতন পাবেন কি না, তা নিয়েও অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে। এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন খোদ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
গুতেরেস জানিয়েছেন, এই প্রতিষ্ঠান তীব্র আর্থিক সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। গত বছরের প্রথম দিকে জরুরি ভিত্তিতে খরচে লাগাম টানা হয়েছিল। সেই অর্থেই গত মাসে সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়েছিল। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি ২০১৯ সালে মোট ব্যয়ের মাত্র ৭০ শতাংশ দিয়েছে। ফলে দেখা যাচ্ছে ঘাটতি পড়েছে ২৩ কোটি ডলার।
যে কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র এখনও ২০১৯ সালের অনুদান দেয়নি তাদের অবিলম্বে তা জমা দেওয়ার আবেদন করেছেন গুতেরেস।
জাতিসংঘের মাত্র ৩৪টি সদস্য রাষ্ট্র প্রতিবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের নির্ধারিত বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেয়। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত জাতিসংঘের মোট ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১২৮টি সদস্য রাষ্ট্র তাদের সাধারণ বাজেট মূল্যায়নের সম্পূর্ণ অর্থ সম্পূর্ণ মিটিয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে ৩৪টি সদস্য রাষ্ট্র নির্ধারিত ৩০ দিনের মধ্যে তাদের সাধারণ বাজেট মূল্যায়নের সমস্ত অর্থ দিয়ে দিয়েছে। ২০১৮-১৯ সালের জাতিসংঘের মোট অপারেটিং বাজেটের পরিমাণ ছিল ৫৪০ কোটি মার্কিন ডলার। এর মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শান্তিরক্ষা মিশনের খরচ অন্তর্ভুক্ত নয়।
এদিকে, এই বিপুল ঘাটতির প্রেক্ষাপটে বেশকিছু কাজকর্মে কাটছাঁট করার কথা ভাবছে জাতিসংঘ। এর মধ্যে রয়েছে সম্মেলন ও বৈঠকের সংখ্যা কমানো। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের সফরের ওপরেও বিশেষ কড়াকড়ির কথা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হচ্ছে।