অনেকে ভাবেন ওজন কমানোর জন্য শুধু ব্যায়ামই যথেষ্ট। জিম গিয়ে ঘাম ঝরানো কিংবা খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের প্রয়োজন নেই। ধারণাটি ভুল। আর সেই ব্যায়ামকে ঘিরে রয়েছে নানা ভ্রান্ত ধারণা সেসব ভুল পদ্ধতি অবলম্বনে হতে হয় দুর্ঘটনার স্বীকার। জেনে নিন, ব্যায়ামের ভ্রান্ত ধারণাগুলো-
১. যত ব্যায়াম, তত ফ্যাট কমে : সারাদিন ব্যায়াম করে ঘাম ঝরালে প্রচুর ফ্যাট বার্ন হয়। এটি ভ্রান্ত ধারনা। ফ্যাট কমানোর জন্য সারাদিন পরিশ্রমের প্রয়োজন নেই। সঠিকভাবে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট। সারাদিন ব্যায়ামে ফ্যাটের বদলে শরীরের প্রয়োজনীয় পদার্থ, যেমন- গ্লাইক্লোজেন, এ্যানার্জি ইত্যাদি কমে যেতে পারে। সুতরাং, অতিরিক্ত ব্যায়াম এ্যানার্জি নষ্ট করা ছাড়া আর কিছু নয়।
২. ঘাম ঝরলে ফ্যাটও কমবে : শরীরে ঘাম ঝরা মানে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে যাওয়া। অনেকে ভাবেন, এতে শরীরের ক্যালোরি কমে ও ফ্যাট বার্ন হয়। কিন্তু আসল কথা হলো- বেশি ঘাম ঝরলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। শরীর থেকে পানি বেরিয়ে গেলে যে কারো হিট স্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই ব্যায়ামের আগে, ব্যায়ামের সময় এবং ব্যায়াম হয়ে গেলে অবশ্যই পানি পান করবেন।
৩.ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমিউলেটরে মেদ কমে : অনেকের ধারণা, ব্যায়ামে ইলেকট্রিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট অথবা ইলেকট্রিক্যাল মাসল স্টিমিউলেটরে শরীরের মেদ কমে। আসলে এসব ডিভাইস ব্যবহারে নির্দিষ্ট মাসল গ্রুপে অল্প বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। যা ফলে মাসল কন্সট্রাকশন হয়, কিন্তু ডিভাইস সরালেই আবার যেই সেই। এই ডিভাইসগুলো ইনজরুড সারলেও মেদ কমাতে সহায়ক নয়।
৪. ব্যায়াম করা মানেই মেদ ঝরানো : কেবল ব্যায়ামে যে মেদ ঝরবে এমনটা নয়। আমাদের জিন, নিয়মিত কায়িক শ্রম আর খাদ্যাভাসে পরিবর্তন ইত্যাদিও মেদ ঝরানোর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলে। এক একজনের শরীরের অনুশীলনের ধরন আর সহনশীলতা একেক রকম। ফলে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সবার একই পরিমান ওজন করবে না।
৫. ঔষধ খেলে ওজন কমে : ঔষধ বা ডায়েট পিল ক্ষুধা কমিয়ে দেয়। এতে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুব একটা প্রভাব ফেলে না। এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। আবার জেনে রাখা ভালো- ডায়েট পিলে অম্ফিথিটামাইন নামক একটি স্টিমিউলেন্ট থাকে, যা অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপ, মাথা ব্যাথা, মাথা ঘোরানো, মাইগ্রেশনের কারণ হয়ে থাকে। এগুলো ভীষণ ক্ষতিকর যা আমাদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
৬. যোগব্যায়ামে মেদ ঝরে : অনেকে ভাবেন, যোগব্যায়ামে শরীরের মেদ ঝরে। ধারণাটি ভুল। মূলত যোগব্যায়ামে আত্মবিশ্বাস, শ্বাস-প্রশ্বাসে উপকার, ভারসাম্য, শারীরিক সক্ষমতা- অনেক ধরনের উপকারই হয়। কিন্তু এর মাধ্যমে মোটেও শরীরের মেদ কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
৭. ব্যায়াম ছেড়ে দিলে ওজন বাড়ে : ব্যায়াম ছেড়ে দিলে ওজন দ্বিগুণ হয়ে যায়, এটা একদমই ঠিক নয়। আসলে নিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের মাসল রেশিও ভালো থাকে। শরীরের মেদ ঝরে ও মাসল টোন ভালো থাকে। ব্যায়াম বন্ধ করে দিলে মেদ ঝরে না এবং মাসল টোন কমে যায়।