একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কে পাচ্ছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব? এ প্রশ্ন এখন তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির রাজনীতিসচেতন মানুষের মুখে মুখে। তিন জেলার তিনটি সংসদীয় আসন থেকেই জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা।
এর মধ্যে বান্দরবানে সবচেয়ে বেশি ষষ্ঠবারের মতো নির্বাচিত হয়েছেন বীর বাহাদুর উশৈসিং। রাঙামাটি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন দীপঙ্কর তালুকদার এবং খাগড়াছড়ি থেকে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। ৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন মন্ত্রীসভা গঠনের পালা।
পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আবারো বীর বাহাদুরের হাতে ন্যস্ত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন দলটির বান্দরবান জেলার নেতাকর্মীরা। নির্বাচনের আগে থেকেই এমন জল্পনা-কল্পনা চলে আসছিলো। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর ষষ্ঠবারের মতো জয় পেয়ে নেতাকর্মীদের সেই প্রত্যাশা আরো বেড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেবার ক্ষেত্রে এবারও বীর বাহাদুরের ওপর আস্থা রাখবেন।
বিগত পাঁচ বছর সাফল্যের সাথে তাঁর দায়িত্ব পালন, পার্বত্য এলাকার উন্নয়নে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন রূপকল্প বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন ওইসব নেতৃবৃন্দ।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পার্বত্য শান্তিচুক্তির অবাস্তবায়িত ধারাগুলো বাস্তবায়ন হওয়া না-হওয়ার বিতর্ককে কেন্দ্র করে জনসংহতি সমিতির সাথে আওয়ামী লীগের বেশ দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই দূরত্ব ঘুচিয়ে পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের যে রাজনৈতিক কৌশল, সেগুলো প্রয়োগের ক্ষেত্রেও বীর বাহাদুরের গ্রহণযোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা গঠিতব্য সরকারকে সুবিধাজনক অবস্থানে রাখবে বলে মনে করেন দলটির স্থানীয় পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাকর্মী।
অন্য দুই জেলার তুলনায় বান্দরবানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্থিতাবস্থাও বীর বাহাদুরকে প্রধানমন্ত্রীর ‘গুডবুকে’ স্থান করে দিয়েছে বলে বিশ্বাস করেন বান্দরবানের বিভিন্ন মহলের মানুষ।
গঠিতব্য মন্ত্রীসভায় আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট নেতাদের পাশাপাশি এবার নতুন বেশ কয়েকজন তরুণ মন্ত্রী আসতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। শুক্রবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনে যেহেতু আমরা বড় বিজয় পেয়েছি, সেহেতু মন্ত্রীসভায়ও বড় চমক থাকবে।
অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে ওবায়দুল কাদেরের ঘোষিত ‘চমক’ থাকলেও, পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব বীর বাহাদুরের হাতেই থাকছে বলে আভাস পাওয়া গেছে।