এন এ জাকির, বান্দরবান প্রতিনিধি ।। অমানুষিক নির্যাতন সইতে না পেরে শেষ পর্যন্ত স্বামীর বিরুদ্ধে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেছেন বান্দরবান শহরের এক গৃহবধু। ওই গৃহবধুর নাম রুপা দাশ (২৮)। তিনি বান্দরবান শহরের ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার পিতার নাম রণজিত দাশ।
জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকেলে শহরের ক্যাচিংঘাটা এলাকার নিজ বাসায় বান্দরবান জেলা তরুন লীগের আহবায়ক কথিত ডাক্তার প্রিন্স সেন যৌতুকের জন্য কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে স্ত্রী রুপা দাশকে হাতুড়ি দিয়ে বেদম পিটিয়ে মারাত্বক জখম করে। একপর্যায়ে চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে স্বামী প্রিন্স সেন পালিয়ে যান। পরে প্রতিবেশীরা গৃহবধুর স্বাজনদের খবর দিলে তারা তাকে উদ্ধার করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে ঘটনার পর কথিত ও র্ধুত ডাক্তার প্রিন্স নিজে থানায় যান স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে। কিন্তু একই ঘটনায় রুপার পরিবারের লোকজনকে থানায় ঢুকতে দেখেই সরে পড়ে লম্পট প্রিন্স। পরে পুলিশ তার মটর সাইকেলটি জব্দ করে। এ ঘটনায় রুপা বাদী হয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে গৃহবধু রুপা দাশের ভাই রাজেশ দাশ বলেন, বিয়ের বছরখানেক যেতে না যেতেই আমার বোনের ওপর যৌতুকসহ নানা কারণে অমানুষিক নির্যাতন করে আসছিল প্রিন্স। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় নির্যাতনের একপর্যায়ে আমার বোনকে আগুনে পুড়িয়েও মারতে চেয়েছিল ওই নরপশু। সে ঘটনায় মামলার পর তাকে আদালত জেলে পাঠিয়েছিল। নয় মাস জেল খাটার পর মুচলেকা দিয়ে অপরাধ স্বীকার করে আমার বোনকে ঘরে তুলে নেয়। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই আবারো নির্যাতন শুরু করে প্রিন্স।
বোনের সংসার টেকাতে সব সহ্য করেছি। কিন্তু আজ আবারো বোনকে কোন কারণ ছাড়াই হাতুড়ি দিয়ে পেটালো হত্যার উদ্দেশ্যে। এক সন্তানের জননী আমার বোনকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
এদিকে এ বিষয়ে জানতে কথিত ডাক্তার প্রিন্সকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে তরুন লীগের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন করিম জানান, প্রিন্স সেনকে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। যে ব্যক্তির কাছে নিজের স্ত্রী সন্তান নিরাপদ থাকতে পারেনা তার কাছে দলও নিরাপদ থাকতে পারেনা। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ খতিয়ে দেখে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বান্দরবান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াছির আরাফাত বলেন যৌতুকের জন্য স্বামী প্রিন্স সেন তার স্ত্রীকে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ এসেছে। তার বিরুদ্ধে যৌতুক আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তের পর আসামীকে খুব শীঘ্রই গ্রেপ্তার করা হবে।