রফিকুল আলম মামুন॥ বৈচিত্র্যপূর্ণ আয়োজনে বান্দরবানে অনুষ্ঠিত হয়েছে নবীন-প্রবীণ শিল্পীদের মিলনমেলা। অনুষ্ঠানটির শিরোনাম ছিলো ‘শিল্পের সৌরভে গৌরবে’। ১ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যার পর থেকেই শহরের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউট অডিটোরিয়াম শিল্পী-কলাকুশলীদের পদচারনায় মুখর হতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এম.পি অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। ততক্ষণে উপস্থিত দর্শকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় অডিটোরিয়াম।
উদ্বোধনের পর থেকেই একে একে নবীন-প্রবীণ উপস্থাপকদের বৈচিত্র্যময় উপস্থাপনায় শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান।
এর পর একে একে মঞ্চে উঠে আসেন জেলার প্রবীণ শিল্পীরা। পরিবেশন করেন নতুন-পুরাতন মিলিয়ে বেশ কিছু গান। এর মধ্যে থোয়াইচিং প্রু নিলু, জাহাঙ্গীর আলম, হানিফুর রশিদ, আমিনুর রহমান প্রামাণিক পুরনো কিছু জনপ্রিয় গানে দর্শক মাতান। এ সময় পর্যায়ে জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাশ ও অংমে মারমার পরিবেশনায় চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার গান-‘ও প্যাসেনজার, এক্কু টানে নিউয়্যুম চকবাজার’ উপস্থিত দর্শকদের বাড়তি আনন্দ যোগান দেয়।
পৌর মেয়র ইসলাম বেবী ও তাঁর স্ত্রী কামরুন্নেছা খানম বেবী পরিবেশন করেন একটি ছোট্ট আঞ্চলিক নাটিকার অংশবিশেষ।
এর পর নবীন শিল্পী সাইফুল বাবলু, আবুসিং, শহীদুল আলম, থুইথুই প্রু, মেহ্লা প্রু, আইডল মংউচিং মং দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের বিখ্যাত গানগুলো পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন দীর্ঘক্ষণ। অনুষ্ঠানে নৃত্যের তালে দর্শক মাতান নৃত্যশিল্পী আবদুল মোমেন, চিং চিং প্রুসহ অন্য নবীন শিল্পীরা।
এর মাঝে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয় পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপিকে। তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান গেয়ে শোনান দর্শকদের। পরে প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধে মঞ্চে ওঠেন আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কাজল কান্তি দাশ। তিনি গেয়ে শোনান বাংলা সিনেমার ‘ও রে নীল দরিয়া’ গানটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, বান্দরবানে অনেক সম্ভাবনাময় শিল্পী রয়েছেন। নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে তাঁরা দেশবরেণ্য হতে পারেন। ধারাবাহিকতা রাখতে হলে সাংস্কৃতিক অংগনের শিল্পীদের চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।
বিভিন্ন সময় বান্দরবানের বিভিন্ন শিল্পীদের প্রতিভা বিকাশ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন দেশে পাঠানোর কথাও শিল্পীদের স্মরণ করিয়ে দেন মন্ত্রী। তিনি প্রতিবছর এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আয়োজকদের আহবান জানান। এ ধরনের মিলন মেলা আরো বড়সড় পরিসরে করারও অনুরোধ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জেলার প্রয়াত সংস্কৃতিকর্মীদের স্মরণ করা হয়। জেলার সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সংগঠক হিসেবে বিশেষ ভূমিকা রাখায় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক দীপ্তি কুমার বড়–য়াকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠান শেষে আয়োজক কমিটির আহবায়ক চথুইফ্রু জানান, সকলের সহযোগিতায় এতবড় অনুষ্ঠান সার্থক ভাবে শেষ করা গেছে। আগামীতেও সর্বস্তরের শিল্পীদের ঐক্য ধরে রেখে এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত রাখা হবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ দাউদুল ইসলাম, ডিজিএফআই’র অধিনায়ক লে. কর্ণেল হাসান মাসুদ, পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার, পৌর মেয়র ইসলাম বেবী, জেলা পরিষদ সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর, আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য কাজল কান্তি দাশসহ জেলার বিশিষ্ট জনেরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটির মিডিয়া পার্টনার ছিলো অনলাইন পোর্টাল খোলা চোখ ডটকম।