থাইরয়েড গ্রন্থির কাজ হলো শরীরের কিছু অত্যাবশ্যকীয় হরমোন (থাইরয়েড হরমোন) উৎপাদন করা। শরীরের জন্য থাইরয়েড হরমোনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা আছে। এর থেকে কম বা বেশি হরমোন উৎপাদিত হলে তা শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলে। থাইরয়েড হরমোন কম উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপোথাইরয়েডিসম এবং বেশি উৎপন্ন হলে বলা হয় হাইপারথাইরয়েডিসম। শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য না থাকলে তার কিছু লক্ষণ দেয়া দেয়। যেমন-
১. হঠাৎ করেই কোনও কারণ ছাড়া ওজন বেড়ে যাওয়াটা হাইপোথাইরয়েডিসমের সমস্যা হতে পারে। খাওয়ার পরিমাণ না বাড়ানো হলেও যদি হঠাৎ করে ওজন বাড়তে শুরু করে তাহলে তা থাইরয়েডের কারণে হতে পারে। আবার হঠাৎ করে যদি ওজন বেশি কমে যায় সেটাও হাইপারথাইরয়েডিসমের কারণে হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
২. নিয়মিত শরীর অবসন্ন লাগার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে হাইপোথাইরয়েডিসম। সাধারণত শরীরের প্রয়োজনের তুলনায় কম হরমোন তৈরি হলে এরকম হতে পারে। সারা রাত পর্যাপ্ত ঘুমানোর পরেও যদি সকালে অবসন্ন লাগে অথবা সারা দিন ধরে ঘুম ঘুম লাগে তাহলে সেটা থাইরয়েডের সমস্যার কারণে হতে পারে।
৩. হাইপোথাইরয়েডিসম হলে অতিরিক্ত চুল পড়া, চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দেয়।
৪. থাইরয়েড হরমোনের অভাবে অর্থাৎ হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে গলা ফুলে উঠতে পারে। গলায় হাত দিয়ে কোনও অস্বাভাবিক ফোলা কিছু পেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৫. অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করাও হাইপারথাইরয়েডিসম-এর লক্ষণ হতে পারে। হাইপারথাইরয়েডিসম হল শরীরে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি থাইরয়েড হরমোন তৈরী হওয়া। সারাক্ষণ শরীরে অস্থির ভাব এবং বিশ্রামহীন বোধ হলে হাইপারথাইরয়েডিসমের সমস্যা হতে পারে।
৬. হাইপোথাইরয়েডিসমের কারণে ঘাম কম হয় এবং ত্বক তার প্রয়োজনীয় আদ্রর্তা পায় না। ফলে ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। হাইপোথাইরয়েডিসমের রোগীদের মধ্যে নখ ভাঙ্গার বা নখে ফাটল ধরার প্রবণতাও বেশি দেখা দেয়।
এসব লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। সময় মতো থাইরয়েডের সমস্যা সনাক্ত করা গেলে তা নিরাময় সম্ভব।