প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক জাকির নায়েক এখন অবস্থান করছেন মালয়েশিয়া। ভারত শুরু থেকেই চেষ্টা করছে তাকে ফিরিয়ে আনার। অনেক আগেই জাকির নায়েককে ভারতে প্রত্যর্পণের আবেদন জানিয়েছিল ভারত। তবে এই আবেদনে সাড়া দেয়নি মালোয়েশিয়া। তারা ভারতের কাছে জাকির নায়েককে প্রত্যাবর্তন করতে অস্বীকার করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে এমনটাই জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলা সাগারান৷আর এর মাধ্যমে কুটনৈতিক মঞ্চে ভারতকে ফের বড়সড় ধাক্কা দিল মালয়েশিয়া৷
সম্প্রতি ভারত সফরে এসে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম কুলা সাগারান জানিয়েছিলেন, জাকির নায়েককে ফেরত পাঠানোর আবেদন করেন সুষমা স্বরাজ৷ তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি৷ তিনি আরো জানান, জাকিরের প্রত্যর্পণের বিষয়টি আদালতের পাঠাতে পারে সরকার৷ সেক্ষেত্রে আদালতের রায়ই শেষ কথা হবে৷ তবে ভারতে ফেরত যাওয়ার আদেশ দিলে, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবেন জাকির নায়েক৷
মালয়েশিয়ায় স্থায়ী নাগরিকত্ব পেয়েছেন জাকির নায়েক:
মালয়েশিযার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মুহাম্মদ বলেছেন, ‘যতদিন পর্যন্ত জাকির নায়েক মালয়েশিয়ায় সমস্যা সৃষ্টি না করছেন, ততদিন তাকে ভারতে ফেরানোর কথা ভাবছে না মালয়েশিয়া সরকার। কারণ নায়েককে ইতিমধ্যেই স্থায়ী নাগরিকত্ব দিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। জাকির এদেশে আসার পর কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি৷ স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়ার পর তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া যাবে না৷’
যা বললেন জাকির নায়েক:
মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত ইসলামি বক্তা ড. জাকির নায়েক বলেছেন, ২৫ বছর ধরে আমি ‘ইসলাম ও শান্তি’ বিষয়ে বক্তৃতা করছি। কখনো সন্ত্রাসকে উৎসাহিত করিনি। সবসময় সম্প্রীতি ও ঐক্যকে উৎসাহ জুগিয়েছি।
এক বিবৃতিতে ড. জাকির বলেন, গেল কয়েক বছরে হাজার হাজার ‘নিউজ’, ইউটিউব ভিডিও এবং সোস্যাল মিডিয়ার পোস্টে আমার কথা ব্যবহার করা হয়েছে, যা আমি বলিনি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একটি ইমেজে আমার ছবি ও বার্তাজুড়ে দিয়ে সেটি প্রচার করা হচ্ছে। যারা ইসলামকে শান্তির ধর্ম হিসেবে মনে করে না, তাদের কাছে এই ধর্ম বিশ্বাসকে দ্রুত ও নোংরাভাবে উপস্থাপন করার এটি সহজ উপায়।
তিনি বলেন, যারা এ ধরনের কিছু দেখতে পাবেন তাদের বলছি কোনো উপসংহারে পৌঁছানোর আগে এগুলো যাচাই করে নেবেন। কেননা মানবতাবিরোধী কোনো বক্তব্যে আমার নাম জুড়ে দেয়া যেকোনো কিছুই মিথ্যা। আমি বারবার বলেছি, একজন ভালো মুসলিম হতে গেলে তার আগে একজন ভালো মানুষ হতে হবে।
জাকির আরো বলেন, আমি যে হাজার হাজার লেকচার দিয়েছি সেগুলোর কোনো একটি নিয়ে কখনো অভিযোগ পাইনি। কিন্তু ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে এক দল ধর্মীয় উগ্রবাদীরা আমার চরিত্র হরণের চেষ্টা চালায়।
উল্লেখ্য, ভারতে বর্তমান সরকারের আমলে আর্থিক প্রতারণা ও সন্ত্রাসবাদে মদদ দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে৷ তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এনআইএ ও ইডি৷ ২০১৬ সালে ভারত ত্যাগ করেছিলেন জাকির নায়েক। তারপরই মালয়শিয়ায় আশ্রয় নেন তিনি৷ গত জানুয়ারি মাসে ওই ইসলামি চিন্তাবিদের প্রত্যর্পণ চেয়ে মালয়েশিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানায় ভারত সরকার৷