যুক্তরাষ্ট্রকে চাপে রাখতে এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করতে যাচ্ছে চীন। এ নিয়ে দুপক্ষের গত সাত বছর ধরে আলোচনা চলছিল। কিন্তু এতদিন পর্যন্ত দুপক্ষ মতানৈক্যে আসতে পারেনি।
অবশেষে মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীন এ চুক্তি নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছে। দুপক্ষের মধ্যে একটি বাণিজ্য চুক্তির খসড়া তৈরি হয়েছে। সব ঠিক থাকলে বুধবার তাতে সই করতে পারে দুপক্ষ। এই চুক্তির ফলে ইউরোপে চীন যেমন একাধিক ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাড়াতে পারবে, তেমন চীনেও ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি বাজার তৈরির সুযোগ পাবে।
তবে চীন শেষ পর্যন্ত কতটা ছাড় দেবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ। যুক্তরাজ্য ইইউর বাজার ছাড়ার পর পণ্যের শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা দেবে এ চুক্তি। ফলে ২০২১ সালের জানুয়ারিতেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য নির্বিঘ্নে চলবে, ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ওয়াইন, অর্গ্যানিকস, অটোমোটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কেমিক্যালসের মতো গুরুত্বপূর্ণ শিল্পগুলোর জন্য কিছু বিশেষ সুবিধার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এ চুক্তিতে৷ গোটা বিশ্বের মতো ইউরোপেও চীনের একাধিক সংস্থা ব্যবসা করছে। ইউরোপে চীনের বাজারও যথেষ্ট। কিন্তু এখন পর্যন্ত চীনের বাজার সেখানে উন্মুক্ত নয়। বিদেশি সংস্থাকে সেই অর্থে চীনে বাণিজ্য করতে দেয়া হয় না।
এ নিয়েই প্রায় সাত বছর ধরে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছিল ইইউর। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বক্তব্য ছিল– ইউরোপে চীনকে বাণিজ্য চালিয়ে যেতে হলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশকেও চীনে ব্যবসার সুযোগ করে দিতে হবে। প্রাথমিকভাবে চীন এ প্রস্তাবে সহমত ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে চীনের বাজার খুলে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন দেশের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
রিয়েল এস্টেট, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ইউরোপ চীনের কাছে সমান অধিকার চেয়েছে। অর্থাৎ চীনের সংস্থা যে সুবিধা পায়, ইউরোপের সংস্থাকেও সেই সুযোগ করে দিতে হবে।
অন্যদিকে চীনও এনার্জিসহ একাধিক বিষয়ে ইউরোপের কাছে বিশেষ সুবিধা চেয়েছে।
কূটনীতিবিদদের একাংশের বক্তব্য, চুক্তিটি যতটা না আর্থিক, তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক। ট্রাম্পের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা যাতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করে, তার ভূমিকা তৈরি হলো এই চুক্তিতে।
কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আমেরিকার ওপর প্রভাব ফেলবে।