ঘূর্ণিঝড় বুলবুল’র প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় এবং পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে মাইকিং চলছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে।
আজ শনিবার সকাল থেকে নগরের হালিশহর, পতেঙ্গা, ফিরিঙ্গিবাজার, পাথরঘাটা ও কাট্টলীর উপকূলীয় এলাকা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারীদের সরাতে মাইকিং কার্যক্রম শুরু করে সিটি করপোরেশন। এছাড়া জেলা প্রশানের উদ্যোগে উপকূলীয় এলাকা আনোয়ারা, বাঁশখালী, সনদ্বীপেও মাইকিং এবং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। এছাড়া বুলবুলের সম্ভাব্য আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দর জেটি থেকে সব ধরনের জাহাজ কর্ণফূলী নদীর পোতাশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থেকে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে গুরুত্বপূর্ণ মেশিনারিজ ও ইক্যুইপমেন্ট নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানান বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।
চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুদীপ বসাক জানান, নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজন সরাতে করপোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডে মাইকিং কার্যক্রম চলছে। এসব এলাকার লোকজন যাতে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারে সেজন্য পরিবহন পুলের ৪০টি গাড়ি পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি মোকাবিলায় চসিকের পক্ষ থেকে ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৭টি মেডিক্যাল টিম গঠন এবং ৪টি অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি রাখা হয়েছে। আঘাতের পর গাছপালা ভেঙে পড়লে রাস্তা থেকে তা দ্রুত সরাতে আধুনিক যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের নির্দেশে নগরের দামপাড়ায় চসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (ফোন নম্বর: ০৩১-৬৩৩৬৪৯, ০৩১-৬৩০৭৩৯) চালু করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সকাল থেকে চান্দগাঁও, বাকলিয়া, সদর, আগ্রাবাদ এবং কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনাররা (ভূমি) নিজ নিজ সার্কেলের পাহাড় থেকে লোকজনকে সরাতে মাইকিং কার্যক্রম চালাচ্ছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। লোকজন যাতে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এসে নিরাপদে থাকতে পারেন সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কোনো জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে (ফোন নম্বর: ০৩১-৬১১৫৪৫, ০১৭০০-৭১৬৬৯১) যোগাযোগের অনুরোধ জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্দেশে জেলার উপকূলীয় অঞ্চল আনোয়ারা,বাঁশখালী ও সন্দ্বীপে ঝুঁকির মুখে থাকা লোকজন ও গবাদিপশু নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ফলে শনিবার সকাল থেকে এ সমস্ত উপজেলায় রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে প্রশাসন কাজ করছে বলেও জানা গেছে।