চাঁদপুরে আলোচিত পারভীন হত্যা ও ধর্ষণ মামলায় ক্রমিক খুনি রসু খাঁসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। চাঁদপুরের নারী ও শিশু আদালতের বিচারক আবদুল মান্নান আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুজন হলেন, রসু খাঁর ভাগনে জহিরুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগী ইউনুছ। এদের মধ্যে ইউনুছ পলাতক রয়েছে।
রসু খাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে সাতটি, হত্যার অভিযোগে দুটি এবং হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। এর মধ্যে দুটি হত্যা মামলায় একটিতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড ও আরেকটিতে খালাস দেওয়া হয়।
চাঁদপুরের নারী ও শিশু আদালতের সরকারি কৌঁসুলি হাবিবুল ইসলাম তালুকদার জানান, চাঁদপুর সদরের মদনা গ্রামের ছিঁচকে চোর রসু খা ভালোবাসায় ব্যর্থ হয়ে এক সময় ক্রমিক খুনিতে পরিণত হয়। ২০০৯ সালের ৭ অক্টোবর ওই গ্রামে মসজিদের ফ্যান চুরির মামলায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর এক এক করে তার লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের চিত্র বেরিয়ে আসে। রসু খাঁ নিজের মুখে স্বীকার করেন ১১ নারী হত্যার কথা। টার্গেট ছিল ১০১টি হত্যাকাণ্ড ঘটানোর। রসু যাদের হত্যা করেছে তারা সবাই ছিল গার্মেন্টস কর্মী। এর মধ্যে ফরিদগঞ্জে এনে ছয়টি, চাঁদপুর সদরে চারটি এবং হাইমচরে একটি মেয়েকে হত্যা করে।
রসু খাঁ ২০০৭ সালের প্রথম দিকে তাঁর শ্যালক মান্নানের স্ত্রী রীনাকে হত্যার মধ্য দিয়ে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী শ্যালকের প্ররোচনায় সে রীনাকে হত্যা করে। রীনার বাড়ি হাতিয়ায়। সে রীনাকে মিথ্যে কথা বলে ফরিদগঞ্জের ভাটিয়ালপুরে এনে ধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে ফেলে যায়। এরপর তিনি একে একে আরও ১০ টি খুন করে। যাদের খুন করা হয় তাদের বয়স ১৭ থেকে ৩৫ এর ভেতর।
খুনি রসু জানিয়েছেন, হত্যার আগে তিনি সব মেয়েকে ধর্ষণ করেননি। শুধুমাত্র যাকে পছন্দ হতো তাকেই ধর্ষণ করত। আর সবাইকেই সে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। সবশেষ তার ভাগনে জহিরুলকে সঙ্গে নিয়ে ২০১০ সালের ২০ অক্টোবর ফরিদগঞ্জের পালতালুক গ্রামের পারভীন আক্তারকে হত্যা করে জঙ্গলে ফেলে দেয়।