পুরো বিশ্ব যখন কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বিপর্যস্ত, তখনও থেমে নেই মায়ানমারের রাখাইনদের ওপর অত্যাচার এবং যুদ্ধাপরাধ। জাতিসংঘে মায়ানমারের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইয়াংহি লি এ বিষয়ে তদন্তের সুপারিশ করেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সারা বিশ্ব যখন করোনা মহামারি নিয়ে ব্যস্ত, তখনও মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দেশটির রাখাইন প্রদেশের সাধারণ জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা অব্যাহত রেখেছে।’
‘যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও আমলে নিচ্ছেনা ক্ষমতাসীন দল। তার বদলে তাতমাদোউ বাহিনী রাখাইন এবং চিন এর জাতিগত সম্প্রদায়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে‘- বলে জানান লি। তাতমাদোউ বাহিনী ক্রমাগত মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। যুদ্ধবিগ্রহের সময় দায়িত্বশীল পক্ষকে অবশ্যই সাধারণ জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হয়। কিন্তু তা না করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়েক দশক ধরে মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী অত্যন্ত দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে, গত কয়েক দশক ধরে সংঘাত অঞ্চলগুলোতে সাধারণ জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ইয়াংহি লি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনায় রাখাইন এবং প্রতিবেশী চিন রাজ্যে প্রচুর সংখ্যক মানুষ মৃত্যু এবং ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। গত ১৩ এপ্রিলের হামলায় দুই শিশুসহ আটজন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। এবং এর ফলে কেয়াউক সেইক নামক একটি গ্রামের সকলকে পালিয়ে যেতে হয়েছে।
লি আরও জানান, ২২ মার্চের হামলায় সামরিক বাহিনীর হাতে হামলা, গ্রেফতার, গুমসহ কেয়াক্তাউ অঞ্চলের ৭শ’ ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংঘর্ষগুলোতে দাতা সংস্থার কর্মীরাও হামলার শিকার হচ্ছে। গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার এক গাড়িচালকের ওপর হামলার পর তার মৃত্যু হয়। মানবাধিকারের কাজে নিয়োজিত কারো উপর এমন হামলা চালানো আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এধরনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের সুপারিশ জানান লি। এছাড়াও মায়ানমার এবং এর সামরিক বাহিনীকে আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ মেনে চলার ক্ষেত্রে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। সেই সাথে মায়ানমারে জাতিসংঘের কঠোর হস্তক্ষেপও দাবি করেন তিনি।