আরও অনেকের মতোই ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, তামাক গাছ ব্যবহার করে এ ভ্যাকসিন তৈরির কাজ চলছে। আগামী জুন মাস নাগাদ ভ্যাকসিনটি ব্যবহার করা যাবে বলে আশা করছে কোম্পানিটি।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দাবি, তামাক গাছ থেকে ভ্যাকসিন তৈরির কাজটি সফল হলে তা প্রচলিত ভ্যাকসিন তৈরির পদ্ধতি থেকে অপেক্ষাকৃত দ্রুতগতির ও নিরাপদ হবে। একে দ্রুত উৎপাদিত তামাক গাছ প্রযুক্তি বলে উল্লেখ করেছে তারা। কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, বিএটি আশা করছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সফল হলে, যথার্থ অংশীদার ও সরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নিয়ে জুনের শুরু থেকে সপ্তাহে ১০ লাখ থেকে ৩০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করা সম্ভব হবে।
উদ্ভিদভিত্তিক ভ্যাকসিন তৈরি করাসহ তামাক গাছের বিকল্প ব্যবহারের দিকে নজর দিচ্ছে বিএটি’র যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বায়োটেক সাবসিডিয়ারি কেন্টাকি বায়োপ্রসেসিং (কেবিপি)। ২০১৪ সালে কেবিপিকে কিনে নেয় বিএটি। এর আগে ইবোলা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে কেবিপি’র। অলাভজনক ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি এখন করোনা ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করবে।
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো জানিয়েছে, ভ্যাকসিনটি এখনো প্রি-ক্লিনিক্যাল টেস্টের পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ অ্যান্ড সোশ্যাল কেয়ারের সঙ্গে কথা বলছে।
কোম্পানির বৈজ্ঞানিক গবেষণাবিষয়ক পরিচালক ড. ডেভিড ও’রিলি বলেন, ভ্যাকসিন তৈরির কাজটি অনেক জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। তবে আমরা বিশ্বাস করি, আমরা আমাদের তামাক গাছ প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছি। কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ের জন্য সরকার ও সকল অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা প্রস্তুত।
ওয়ার্লডোমিটারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৬২৫ জনে পৌঁছেছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে করোনা ভাইরাস। উৎপত্তিস্থল চীনে ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও সেখানে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব কমে গেছে। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে এই ভাইরাসের প্রকোপ বাড়ছে।
চীনের বাইরে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ১৩ গুণ বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১১ মার্চ দুনিয়াজুড়ে মহামারি ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।