বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। এটি নিয়ে খুব বেশি আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। বিদ্যমান পদ্ধতিতেই করোনার এই নতুন ধরনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে বলেও জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।
করোনার নতুন ধরন নিয়ে যুক্তরাজ্য ও তার বাইরে সৃষ্ট উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ডব্লিউএইচও আজ এ কথা জানায়। সংস্থার কর্মকর্তারা ভাইরাসের এ ধরন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক দিকও খুঁজে পেয়েছেন। ভাইরাসটিকে অনুসরণ করার জন্য ব্যবহৃত নতুন সরঞ্জামগুলো কাজ করছে বলে জানিয়েছেন তারা।
গতকাল ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, করোনার নতুন ধরন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এর পর এ নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়ে যায়। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরিবিষয়ক প্রধান মাইক রায়ান বলেন, ‘‘এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যায়নি। তবে এটিকে তার নিজের গতিপথে চলতে দেয়া যাবে না। আমাদের একটি ভারসাম্য খুঁজে পেতে হবে। স্বচ্ছতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যা ঘটছে জনসাধারণকে তা জানানো দরকার। তবে এটিও পরিষ্কার করতে হবে যে, এটি ভাইরাসের বিবর্তনের স্বাভাবিক অংশ।’’
ব্রিটেন থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোভিড ১৯-এর বর্তমান ধরনটি থেকে নতুন ধরনটি লোকজনকে বেশি অসুস্থ করছে বা এটি আরও প্রাণঘাতী, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; তবে নতুন ধরনটি আরও সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে।
যেসব দেশ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, তারা ঝুঁকি পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত সাবধানতা থেকেই এটি করেছে এবং এটি দূরদর্শী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন রায়ান। যুক্তরাজ্যে পাওয়া করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরন নিয়ে বিশ্বজুড়ে শঙ্কা বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৪০টিরও বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
করোনার নতুন ধরন সম্পর্কে গত সপ্তাহে তথ্য দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। গত শনিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনার আগের ধরনের তুলনায় নতুন ধরনের সংক্রমণ ক্ষমতা ৭০ শতাংশ বেশি। এ কারণে সংক্রমণ পরিস্থিতি চিন্তিত করে তোলে যুক্তরাজ্য সরকারকে। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য গতকাল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন মন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন।
করোনার নতুন ধরন যুক্তরাজ্যের বাইরেও একাধিক দেশে ছড়িয়েছে। এ অবস্থায় ৩০টির বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ডেনমার্কে করোনাভাইরাসের ওই নতুন ধরনটি আবিষ্কৃত হওয়ার পর দেশটির ভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে প্রতিবেশী সুইডেন।
এ বিষয়ে সাধারণ একটি নীতি গঠনের জন্য আলোচনায় বসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।