‘করোনাভাইরাস’ কোনো জীবিত জীব নয়। তবে লিপিড (ফ্যাট)-এর সুরক্ষামূলক স্তর দ্বারা আচ্ছাদিত একটি প্রোটিন অণু (ডিএনএ/আরএনএ), যা যখন চোখ, নাক বা মুখের মিউকোসার কোষ দ্বারা শোষিত হয়, তখন তাদের জিনগত কোড পরিবর্তন করে আরও আক্রমণাত্বক এবং বহুগুণ শক্তিশালী রূপ ধারণ করে। যেহেতু ভাইরাস কোনো জীব নয়, তবে একটি প্রোটিন অণু, তাই এটি হত্যা করা যায় না। বিচ্ছিন্নতার সময় এটি তাপমাত্রা, আর্দ্রতা এবং যে ধরনের পদার্থের উপর রয়েছে তার ওপর নির্ভর করে।
১. ভাইরাসটি খুব ভঙ্গুর। এটি রক্ষা করে এমন একমাত্র জিনিসটি হলো চর্বিযুক্ত পাতলা বাইরের স্তর। যে কারণে কোনো সাবান বা ডিটারজেন্ট হলো সর্বোত্তম প্রতিকার। কারণ ফেনা চর্বিকে গলিয়ে দেয়। এ জন্য কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত ধুলে প্রচুর ফেনা তৈরি হয়ে চর্বির আস্তর ভেঙে ফেলতে সহায়তা করে চর্বির দেয়াল বা স্তর দ্রবীভূত করার মাধ্যমে, প্রোটিনের অণু ছড়িয়ে যায় এবং এটি নিজে নিজেই ভেঙে যায়।
২. তাপে চর্বি গলে। এ জন্য হাত, কাপড় এবং সমস্ত কিছুর জন্য ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে পানি ব্যবহার করা ভালো। গরম পানি আরও ফেনা তোলে এবং এটি আরও কার্যকর হয়ে বাইরের চর্বির আস্তর গলিয়ে ফেলে।
৩. ৬৫% অ্যালকোহল বা অ্যালকোহলসহ যে কোনো মিশ্রণ চর্বি গলিয়ে ফেলে। বিশেষত ভাইরাসটির বহিরাগত লিপিড স্তর।
৪. ১ ভাগ ব্লিচ এবং ৫ ভাগ পানির সঙ্গে মিশ্রণ ভাইরাসের প্রোটিন দ্রবীভূত করে। ফলে এটি ভিতরে থেকে ভাইরাসকে ভেঙে দেয়।
৫. অক্সিজেনযুক্ত পানি সাবান, অ্যালকোহল এবং ক্লোরিন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড প্রোটিনকে দ্রবীভূত করে (তবে এটি আপনার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে)।
৬. ভাইরাস ব্যাকটেরিয়ার মতো জীবিত জীব নয়। যার ফলে অ্যান্টিবায়োটিকের সাহায্যে এটিকে মেরে ফেলা যায় না।
৭. ব্যবহৃত বা অব্যবহৃত পোশাক, চাদর বা কাপড় ঝাঁকুনি বা ঝাড়া না দেওয়া ভালো। এটি ছিদ্রযুক্ত পৃষ্ঠে আটকানো অবস্থায় ৩ ঘণ্টা (ফ্যাব্রিক), ৪ ঘন্টা তামাতে আটকিয়ে থাকে ও নিজে নিজে এটি বিভাজিত হয়। এছাড়া ২৪ ঘণ্টা পিচবোর্ডে, ৪২ ঘণ্টা ধাতুতে এবং ৭২ ঘণ্টা প্লাস্টিকে থাকতে পারে। তবে ঝাঁকানোর কারণে ভাইরাসের অণুগুলো বাতাসে প্রায় ৩ ঘণ্টা ভাসতে থাকে এবং নাকের মধ্যে আটকে যেতে পারে।
৮. ভাইরাসের অণুগুলো বাহ্যিক ঠান্ডায় খুব অস্থিতিশীল থাকে । স্থিতিশীল থাকতে বিশেষত অন্ধকার ও আর্দ্রতার প্রয়োজন হতে পারে। অতএব শুষ্ক, উষ্ঞ এবং উজ্জ্বল পরিবেশে এটি দ্রুত হ্রাস করতে পারে।
৯. UV আলোক হালকা ভাইরাস প্রোটিনকে ভেঙে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, একটি মাস্ককে জীবাণুমুক্তকরণ এবং পুনরায় ব্যবহারে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে UV কোলাজেন (যা প্রোটিন ভেঙে দেয়) ত্বকের ক্যান্সার সৃষ্টি করে। সে জন্য সাবধান থাকা ভালো।
১০.ভাইরাস সুস্থ ত্বকের মধ্য দিয়ে যেতে পারে না।
১১. ভিনেগার কার্যকর নয় কারণ এটি চর্বির প্রতিরক্ষামূলক স্তরটি ভেঙে দেয় না।
১২. অ্যালকোহল বিশেষ করে (৬৫%) ভাইরাসের চর্বির আস্তর ভেঙে দেয়।
১৩. গরম পানি ও লবণ দিয়ে গড়গড়া করা বাঞ্ছনীয়। সঙ্গে Liesterine ব্যবহার করা যেতে পারে।
১৪. সীমাবদ্ধ জায়গাতে ভাইরাসের ঘনত্ব বেশি হতে পারে। যত বেশি উন্মুক্ত বা প্রাকৃতিকভাবে বাতাস চলাচল করা হবে তত কম হবে ভাইরাসের ঘনত্ব।
১৫. বাথরুম ব্যবহার করার সময় এবং শ্লেষ্মা, খাবার, তালা, নক, সুইচ, রিমোট কন্ট্রোল, সেলফোন, ঘড়ি, কম্পিউটার, ডেস্ক, টিভি ইত্যাদি স্পর্শ করার আগে এবং পরে আপনার হাত ধুতে হবে।
১৬. নখ ছোট রাখুন যাতে ভাইরাসটি সেখানে না লুকায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সমষ্টিগতভাবে বিশ্বের এই মহা ক্রান্তিলগ্নে সবাইকে শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে।