সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক জামাল খাসোগির নিখোঁজের সমালোচনা করায় এবার দেশটির রাজপরিবারের অন্তত পাঁচ সদস্যকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জার্মানিতে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে থাকা প্রিন্স খালেদ বিন ফারহান আল-সৌদ ব্রিটেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান তিনি।
ওই পত্রিকাকে প্রিন্স ফারহান জানান, রাজপরিবারের এসব সদস্য আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা রাজা আবদুল আজিজের নাতি। গত সপ্তাহে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রিন্সরা সাংবাদিক খাসোগি নিখোঁজের সমালোচনা করেছিলেন। এরপরই তাদের আটক করে গুম করা হয়।
আটক প্রিন্সদের কোথায় রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
প্রিন্স ফারহান বলেন, ‘ঠিক পাঁচদিন আগে কয়েকজন প্রিন্স সালমানের সঙ্গে দেখা করতে গেয়ে বলেন, ‘তারা আলে সৌদি পরিবারের ভবিষ্যত নিয়ে ভীত। এসময় তারা খাসোগির ঘটনা উল্লেখ করেন। কিন্তু তাদের সবাইকে জেলে পাঠানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, সৌদি রাজপরিবারের সঙ্গে ভিন্ন মত পোষণকারী প্রিন্সদের প্রায় সময়ই আর্থিক সুবিধার লোভ দেখিয়ে বিদেশে সৌদি কূটনৈতিক মিশনগুলোতে আমন্ত্রণ জানানো হতো। এভাবে সৌদি কর্তৃপক্ষ তাকে অন্তত ৩০ বার সৌদি কূটনৈতিক মিশনে নেয়ার চেষ্টা করেছে।
ফারহান বলেন, এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে খাসোগি নিখোঁজের ১০ দিন আগে কায়রোয় সৌদি কন্স্যুলেটে ফারহানের পরিবারকে কয়েক কোটি ডলারের বিশাল চেক নেয়ার জন্য ডাকা হয়েছিল। সে সময় তাকে বলা হয়েছিল, সৌদি কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছে যে, তিনি আর্থিক সংকটে আছেন এবং সরকার তাকে সাহায্য করতে চায়। ফারহান ও তার পরিবারকে পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়ার অঙ্গীকারও করেছিল সৌদি কন্স্যুলেট। আমি জানতাম সৌদি কন্স্যুলেটে গেলে কী হতো।
লন্ডন প্রবাসী সৌদি ব্যঙ্গ-রচয়িতা গানেম আদ-দোসারি প্রিন্স ফারহানের বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, সৌদি আরবের ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক ও লেখকরা এখন বিদেশ সফরের বিষয়ে ভয় পাচ্ছেন; এমনকি অনেকে তাদের ঘর-বাড়ি ছাড়তে ভয় পাচ্ছেন।