দেশের ১২টি জেলায় বন্যার পানি থৈ থৈ করছে। ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, মাত্র ৭ দিনের মাথায় ঘরবাড়ি ও ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ১৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানিবন্দী হয়ে আছে সাড়ে তিন লাখ মানুষ।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। উজানে ভারতের আসাম, মেঘালয়, পশ্চিমবঙ্গসহ হিমালয়ের পাদদেশে ভারী বৃষ্টি হয়ে সেই পানি ভাটিতে বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসতে পারে। ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে পারে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দেশের চারটি নদী অববাহিকায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বন্যার পানি একযোগে বাড়তে পারে। কুড়িগ্রাম ও জামালপুর হয়ে পানি ব্রহ্মপুত্র দিয়ে দ্রুত বাড়বে। এতে উত্তরাঞ্চলসহ মানিকগঞ্জ পর্যন্ত পানি দ্রুত বাড়তে পারে। এক সপ্তাহের মধ্যে তিস্তার পানি বেড়ে লালমনিরহাট থেকে রংপুর পর্যন্ত বন্যার পানি বাড়তে পারে।
বন্যা কবলিত জেলাগুলো হচ্ছে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, রাজবাড়ি, সিলেট ও সুনামগঞ্জ।
ত্রাণ ও দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানিয়েছেন প্রতিটি জেলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে রাখা যায়, সেই ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গঙ্গা ও পদ্মার পানি এরই মধ্যে মুন্সিগঞ্জে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঢাকার চারপাশের নদীগুলোর মধ্যে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, বালু, তুরাগ ও শীতলক্ষ্যার পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমা অতিক্রম করে আপাতত বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
সিলেটের নদীগুলোতেও পানি এ মাসের মাঝামাঝি নাগাদ বাড়তে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগে হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরীর পানিও এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বাড়তে পারে।
সরকারের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে দুর্গত মানুষের জন্য নগদ অর্থের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ ও বেসরকারি সংস্থাগুলো বলছে, এসব ত্রাণ খুব কম মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের হিসাবে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১২ জেলার মধ্যে শুধু নীলফামারী ও সুনামগঞ্জে ত্রাণের মজুত আছে। বাকি জেলাগুলোতে সরকার থেকে পাঠানো ত্রাণ দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হচ্ছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হচ্ছে জামালপুর। এ জেলার ৩ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এরপর রয়েছে গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলা।