বয়স বাড়ছে আর শরীরে বাসা বাঁধছে নানা রোগ। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে চর্বির আধিক্য, তার সঙ্গে হয়তো আছে হৃদ্রোগ বা স্নায়ুর সমস্যা। কারও হয়তো আছে থাইরয়েডের সমস্যা, কেউ ডিপ্রেশনের ওষুধ খান। যেকোনো সময় কারও লাগতে পারে অ্যান্টিবায়োটিক, ব্যথার ওষুধ বা অ্যালার্জির ওষুধ। ওষুধের কৌটায় ওষুধের ছড়াছড়ি। কিন্তু এত ওষুধের ভিড়ে একটা আরেকটার সঙ্গে কোনো প্রতিক্রিয়া বা বিক্রিয়া করছে কি না, তা কখনো ভেবে দেখেছেন কি?
চিকিৎসাবিজ্ঞান ও ঔষধবিজ্ঞানে ড্রাগ ইন্টারেকশন বা বিভিন্ন ওষুধ একসঙ্গে খাওয়ার ফলে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। একসঙ্গে বিভিন্ন ওষুধ খেলে একে অপরের কার্যকারিতা যেমন কমিয়ে দিতে পারে, তেমনি অতিরিক্ত বাড়িয়েও দিতে পারে। একই ঘটনা ঘটতে পারে নানা খাবারের কারণেও। দু-একটা উদাহরণ দেওয়া যাক। থাইরক্সিন বা থাইরয়েড হরমোনের সঙ্গে অ্যান্টাসিড বা আয়রন ট্যাবলেট খেলে এর শোষণ কমে যেতে পারে, ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল না-ও পেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে এ জাতীয় ওষুধ অন্তত দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে খেতে হবে। আবার যক্ষ্মার চিকিৎসা চলাকালে কোনো নারী রোগীর জন্মবিরতিকরণ পিলের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। তখন পিল খাওয়া অবস্থাতেই তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়তে পারেন। এ রকম পরিস্থিতি এড়াতে যাঁরা নানা ধরনের ওষুধ খান, তাঁদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
■ যখনই কোনো কারণে চিকিৎসক একটি নতুন ওষুধ দেবেন, তখন আপনি নিয়মিত কী কী ওষুধ খাচ্ছেন, সেই তালিকা দেখান।
■ অনেকে বিভিন্ন রোগের জন্য ভিন্ন ভিন্ন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে থাকেন। সে ক্ষেত্রে প্রত্যেককে আলাদা করে অন্যদের ব্যবস্থাপত্র দেখান। একই গোত্রের দুটি ওষুধ দুজন চিকিৎসক খাওয়ার পরামর্শ দেওয়ার কারণে দুটিই একসঙ্গে চলতে থাকার নজির প্রায়ই পাওয়া যায়।
■ ওষুধের দোকানদার বা আত্মীয় ও প্রতিবেশীর পরামর্শে নিজে নিজে কোনো ওষুধ পরিবর্তন করবেন না। যেমন আপনি হয়তো একটি উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ খাচ্ছেন, আপনার স্বামী আরেকটি খাচ্ছেন। সেই ওষুধ আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে, এমন কোনো কথা নেই।
■ মনে রাখবেন বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট বিভিন্ন ওষুধের সঙ্গে নানা ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া করে। তাই চিকিৎসককে দেখিয়ে নিন।
■ নতুন ওষুধ খাওয়ার আগে না পরে, তা ভালো করে জেনে নিন। কেননা অনেক খাবারও ওষুধের কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে।
■ চিকিৎসকের কাছে অনেকে প্রায়ই জন্মবিরতিকরণ পিল, ঘুমের ওষুধ, মানসিক রোগের ওষুধ বিষয়ে তথ্য গোপন করেন বা লজ্জায় বলেন না, এমনটা করবেন না।