মেলায় এসেছে সা’দ জগলুল আব্বাসের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সময়ের অশ্বারোহী’। একই সাথে পাওয়া যাচ্ছে ২০১৯ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘শব্দপূরাণ ও আমি’।
‘সময়ের অশ্বারোহী’ পাওয়া যাচ্ছে রচয়িতা প্রকাশনীর স্টল নম্বর ৬৩২-এ। ২৪০ টাকা মূল্যের বইটি মেলায় ২৫% ছাড়ে ১৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া ২০১৯ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে জার্নিম্যান বুকস-এর ১১ নম্বর প্যাভিলিয়নে। বইটির মুদ্রিত মূল্য ২০০ টাকা। মেলায় ২৫% ছাড়ে ১৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
‘সময়ের অশ্বারোহী’ কাব্যগ্রন্থে প্রকাশিত তাঁর একটি কবিতা:
একদিন এই উদ্বাস্তু পৃথিবীর শিকড়ের খোঁজে বেরিয়েছিলাম;
চেনা অচেনা বহু দুর্গম বনাঞ্চল আর জনপদ পেরিয়ে
কালের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলাম সম্ভবতঃ,
সামনে ছিলো শুধুই শূণ্যতার ভ্রান্তিকাল;
আচমকা কিনারায় পা হড়কে গিয়েছিলো-
হাওয়া ভেদ করে আমি পড়ে গিয়েছিলাম একখন্ড পাথরের মতো।
উপরে আকাশ, তারই নীল ছায়া সমুদ্রে- শুধুই ধুসর নীল চারিদিকে;
তখন শরীরে পাখীর মতো ডানা গজিয়েছিলো,
আমি স্পষ্ট অনুভব করেছিলাম-
হা ইশ্বর! আমিতো পাখী নই,উড়তে শিখিনি!
আমি জলে নিক্ষিপ্ত হয়েছিলাম-
ক্লান্ত ডানা ভাঙ্গা এ্যলবাট্রসের মতো;
নীলের গভীরে ডুবে যেতে যেতে দেখেছিলাম
কাঁচের মতো জলের ছাত ভেদ করে আসা সূর্যের আলোর দোলা-
তারপর ক্রমশঃ ঘষা কাঁচের মতো দৃষ্টি স্তিমিত হয়ে এসেছিলো;
আমি অন্ধকার ছাড়িয়ে প্রানপণে আলো জাপটে ধরতে চেয়েছিলাম-
শেষ বারের মতো, হয়তো ।
সেদিন দু’টো নিঁখোজ সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো
মহাকালের পাতায়, পাশাপাশি-
নিস্পৃহ পৃথিবীর এবং প্রতারিত একজন সময়ের অশ্বারোহীর!
একক কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও সা’দ লিখেছেন দেশ-বিদেশের আরো বহু সাহিত্যভিত্তিক প্রকাশনা এবং অনলাইন মাধ্যমে।
নিজের কবিতা সম্পর্কে সা’দ বলেন- ‘আমার জীবনের এই দীর্ঘ এবং ঘটনাবহুল ভ্রমণে পার হয়েছি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক পটভূমি। সেখানে যেমন স্বাভাবিক ভালোবাসা এবং মানবিকতার অনুধ্যায়/প্রতিবিম্বন আছে; তেমনি আছে প্রতিবাদ এবং দ্রোহের স্ফূরণ। পুরোটা না হলেও সেই দৃষ্টিকোণ হতে দেখা জীবনের কিছুটা প্রতিফলন এসব লেখায় পড়েছে সেটা আমি জানি ।’
সা’দ জগলুল আব্বাস-এর জন্ম নোয়াখালীতে। তবে জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে ঢাকায়। বাবা-মা তোফাজ্জল হক এবং মাজেদা বেগম। দু’জনই প্রয়াত। সহধর্মিনী নাহিদ মুস্তারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। দুই মেয়ে মার্সিয়া বিনতে সাদ ও মেহতাজ বিনতে সাদ। দু’জনই ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর। বড় মেয়ে মার্সিয়া পেশায় ব্যাংকার; ছোট মেয়ে মেহতাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামখ্যাত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বারকলি থেকে স্নাতকোত্তর শেষে সানফ্রান্সিসকোতে কর্মরত।
সা’দ সাহিত্য এবং সঙ্গীতানুরাগী মানুষ; খেলাধুলা ভালোবাসেন, সৌখিন আলোকচিত্রী, মাঝেমাঝে আঁকিবুকিও করেন। লেখালিখিটাও শখের বশেই করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইবিএ থেকে ব্যবসা প্রশাসনে মাস্টার্স করেছেন। একজন মুক্তিযোদ্ধা। অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার।