সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবারের মতো ইতালিতে আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল বা বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১,০৮,২৩৭ জন। যা আগের দিনের তুলনায় ২০ জন কম। কর্তৃপক্ষ বলছে, এই পার্থক্য খুব সামান্য হলেও এটা খুবই ইতিবাচক অগ্রগতি।
ইতালির লকডাউন আগামী ৩রা মে পর্যন্ত চলবে। কিন্তু এরইমধ্যে কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। এর মধ্যে রয়েছে বইয়ের দোকান, স্টেশনারি এবং শিশুদের কাপড় বিক্রির দোকান। তবে এর মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি কিভাবে নিরাপদে কার্যকর করা যায় তা দেখছে কর্তৃপক্ষ।
স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পর ইতালিতে সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত মানুষ রয়েছে। রোববার দেশটিতে সক্রিয় সংক্রমণ পাওয়া গেছে ৪৮৬টি। বেসরকারি সুরক্ষা সংস্থার প্রধান অ্যাঙ্গেলো বোরেলি বলেন, ‘‘প্রথমবারের মতো আমরা একটি ইতিবাচক অগ্রগতি দেখছি। আর তা হলো আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে।’’
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির তথ্য মতে, ইতালিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার মানুষ মারা গেছে। যাই হোক, যেসব মানুষ বাড়িতে কিংবা কেয়ার হোমে মারা যাচ্ছেন তাদের হিসাব এই সংখ্যার সাথে সংযুক্ত করা হয়নি। অনেকে মনে করেন যে, প্রকৃত মৃত এবং আক্রান্তের সংখ্যা সরকারি হিসাবের তুলনায় বেশি।
ইতালির কর্তৃপক্ষ বলছে, আক্রান্তের সংখ্যা কমাটা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রথমবারের মতো কমেছে; এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, যদিও আগের দিনের তুলনায় এ দিন কম পরীক্ষা করা হয়েছে। যারা মারা গেছেন এবং যারা সুস্থ হয়েছেন তাদের সর্বমোট সংখ্যা ১.২% বেড়েছে। দেশটিতে সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এত কম হারে সংক্রমণ বাড়লো। তবে সোমবার দেশটিতে ৪৫৪ জন মারা গেছে যা রোববারের তুলনায় কিছুটা বেশি। কিন্তু সংক্রমণের সংখ্যায় আশার আলো দেখা গেলেও মৃতের সংখ্যা কমার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।
নিবিড় পরিচর্যা বা আইসিইউ ব্যবহারের সংখ্যাতেও নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। গত এক মাসের মধ্যে সোমবার সবচেয়ে কম সংখ্যক আইসিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এখনো দূর্যোগ কাটিয়ে উঠতে পারেনি ইতালি। কিন্তু দেশটি সঠিক পথে রয়েছে এবং মনে হচ্ছে যে, তাদের আত্মত্যাগ ফল বয়ে আনতে শুরু করেছে।
ফ্রান্সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক জেরম সালোমন একে ‘‘উল্লেখযোগ্য এবং বেদনাপূর্ণ’’ বলে উল্লেখ করেছেন। যুক্তরাজ্য না করলেও ফ্রান্স করোনাভাইরাসে মোট মৃতের সংখ্যার সাথে কেয়ার হোমে মারা যাওয়া সংখ্যাও যোগ করছে। সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনাভাইরাসের কারণে ২০,২৬৫ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১২,৫১৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এবং ৭,৭৫২ জন কেয়ার হোমে মারা গেছে।