করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়ে সামাজিক বা শারিরীক দূরত্বের গুরুত্ব আমরা কে না জানি। কিন্তু জীবন কি থেমে থাকবে? কাজকর্ম কি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া সম্ভব? কিছু মানুষের সাথে একত্রে কাজ না করলে আপনার কাজ এগোচ্ছেই না, সেক্ষেত্রে কী করা যাবে? ভিডিও কনফারেন্সিং এপগুলোই হতে পারে এই সংকটের আপাতঃ সমাধান।
এখানে আমরা ২০২০ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় চারটি ভিডিও কনফারেন্সিং এপের সাথে পরিচিত হবো। ভার্চুয়াল মিটিং রুম তৈরির এই এপগুলোর কোনোটা একদম ফ্রি। কোনোটা খুব সামান্য চার্জের বিনিময়ে ব্যবহার করা যায়।
১. ফ্রি কনফারেন্স কল ডটকম
ফ্রি কনফারেন্স কল আসলেই ফ্রি। আপনার যতটুকু ইচ্ছে, ততটুকু মাসিক ডোনেশন দিয়েই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটা দিয়ে অডিও এবং ভিডিও কনফারেন্সিং করা যায়। ওয়েব মিটিং, স্ক্রীন শেয়ারিং ও কল রেকর্ডিং করা যায় একদম ফ্রিতে। এখানে ১০০০ জন পর্যন্ত একসাথে যুক্ত হতে পারেন। ১০০০ জনের একসাথে মিটিং করার আদৌ দরকার আছে কীনা কে জানে!
এখানে মিটিং শিডিউল করে রাখা যায়। মিটিংয়ের অডিও এবং ভিডিও রেকর্ড করে রাখা যায়। সিকিউরিটি মোটামুটি ভালোই। গুগল ক্যালেন্ডারের সাথে এটাকে সংযুক্ত করে রাখা যায়।
২. ইজেড টকস
ইজেড টকস-এ ভিডিও কল চলাকালীন চ্যাট, ফাইল ও স্ক্রীন শেয়ার করা যায়। এখানে ইন্টারেকটিভ হোয়াইটবোর্ডও আছে। নেটের স্পীড কম থাকলে শুধুমাত্র অডিও কলের সুবিধাও নিতে পারেন।
ইজেট টকস-এর স্টার্টআপ এপটিতে বিনামূল্যে ২৫ জন যুক্ত হতে পারেন। ১০০ মিনিট পর্যন্ত মিটিং করাও ফ্রি।
এখানে মিটিং রুম লক করে রাখা যায়, যেন নতুন কেউ ঢুকতে না পারে। প্রয়োজনমতো যে কাউকে বিভিন্ন ম্যাটারিয়েল উপস্থাপন করার অনুমতি দেওয়া যায় এমনকি লাইভ ভোটাভুটিরও ব্যবস্থা রয়েছে এটিতে।
ইজেট টকস-এ ডাইরেক্ট লিংক দিয়ে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো যায়। যারা মিটিংয়ে থাকতে পারেননা, তাদের জন্যে মিটিংটি রেকর্ড করে রাখা যায়। ফ্রি ভার্সনে ১ জিবি পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজ রাখার জন্য ক্লাউড স্টোরেজ পাওয়া যায়।
৩. জয়েন মি
ছোটখাট গ্রুপ আলোচনা বা কোনো কিছু উপস্থাপন করতে চাইলে জয়েন মি একটি ভালো প্ল্যাটফর্ম। গুগল ক্যালেন্ডার এবং মাইক্রোসফ্ট আউটলুক ক্যালেন্ডারের সাথে সংযুক্ত করে এখানে মিটিং শিডিউল করে রাখা যায়।
জয়েন মি’র ফ্রি ভার্সনে ৫ জন পর্যন্ত সংযুক্ত হতে পারেন। সময়ের বাধ্যবাধকতা নেই। যতক্ষণ খুশি মিটিং চালু রাখা যায়। মিটিংয়ের উপস্থাপক পরিবর্তন করা যায় এবং তাদের হোয়াইটবোর্ডও সবার সাথে শেয়ার করা যায়। ল্যাপটপ, ডেস্কটপ এবং স্মার্টফোন সবখানেই এটা ব্যবহার করা যায়।
৪. জুম
জুম এর নাম এর মধ্যেই অনেকে জেনে গেছেন। ফ্রি ভার্সনে ১০০ জন পর্যন্ত সংযুক্ত হতে পারেন। সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট মিটিং করা যায়। একজনের সাথে একজন মিটিং করলে সেখানে আর ৪০ মিনিটের বাধ্যবাধকতা থাকেনা, যতক্ষণ খুশি কথা বলা যায়। যতবার খুশি মিটিং করা যায়।
জুম-এ স্ক্রীন শেয়ার করা যায়, হোয়াইটবোর্ড ব্যবহার করা যায় এবং মিটিংয়ের ভিডিও রেকর্ড করে নিজের কম্পিউটারে সংরক্ষণও করা যায়।
জুম-এর একটি মজার ফীচার হলো ব্রেক-আউট রুম। যেখানে মূল মিটিং থেকে বের হয়ে ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে আলাদাভাবে আলোচনা করে নেয়া যায়। জুম ব্যবহার খুবই সহজ।
সবকিছুর পর কথা থেকে যায়। কথাটা কী? এই করোনাভাইরাস চলে না যাওয়া পর্যন্ত শারিরীক দূরত্ব বজায় রাখুন। ঘরে থাকুন। সুস্থ থাকুন।