প্রতিটি মানুষের প্রয়োজনীয় পেশা এই নরসুন্দর। এ যাবত আমরা এ পেশায় শুধু পুরুষদেরকে কাজ করতে দেখলেও ব্যতিক্রমী এক উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন এই নারী নরসুন্দর। তাঁর নাম শেফালী রানী। ১৫ বছর ধরে পুরুষের চুল-দাড়ি কাটছেন তিনি। তাঁর ছোট্ট দোকানটি ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার দোগনা বাজারে। এই কাজ করেই চলছে তাঁর সংসার। এই সাহসী কাজের জন্যে তাঁকে জয়ীতা সম্মাননা দিয়েছে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।
পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বিয়ে হয় শেফালী রানীর। কাঁঠালিয়ার দোগনা বাজারে সেলুন ছিল স্বামী বিশ্বনাথ শীলের। হঠাৎ করে জটিল রোগে আক্রান্ত হলে স্বামী ও পাঁচ সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন শেফালী রানী। অনেক ভেবেচিন্তে স্বামীর পেশাতেই নেমে পড়েন তিনি। স্থানীয়দের চুল-দাড়ি কেটে সামান্য আয় দিয়েই পড়াশোনা করাচ্ছেন সন্তানদের। এরমধ্যে মেজো মেয়ে বিথিকা স্নাতকে লেখাপড়া করছেন।
শেফালীর এই নরসুন্দর পেশার শুরুটা ছিল খুবই কঠিন এবং বিব্রতকর। গ্রামের বাজারে পুরুষের চুল দাড়ি কাটার কাজ শুরু করলে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। তবে স্থানীয় কিছু মানুষের সে যাত্রা সমালোচনা দূর হয়। এখন সবাই প্রশংসা করছেন এই নারীর।
অভাবের সংসারে স্বামীর পেশা ধরে রেখে শেফালী যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তাতে খুশি সন্তানরাও। পড়ালেখা করে তারা প্রতিষ্ঠিত হতে চানা।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জানান, শেফালী রানীর এমন সাহসী পদক্ষেপের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে জয়িতা সম্মাননা দিয়েছে জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর। প্রয়োজনে তাকে ক্ষুদ্র ঋণ দিয়েও সহায়তা করতে চায় তারা।
শেফালীর প্রতিবেশী ও স্থানীয়রা বলছেন, শেফালী রানীর মতো সাহসী নারীদের এগিয়ে নিতে প্রয়োজন সবার সহযোগিতা। নারীদের কাজের বিরুপ সমালোচনা না করে বরং তাদের আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে সবার ইতিবাচক মনোভাব প্রয়োজন। তাহলে সমাজে বড় পরিবর্তন আসবে।